পাতা:বিজ্ঞান দর্পণ (প্রথম খণ্ড, ১২৮৯).pdf/১৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আশ্বিন ১২৮৯।]
রহস্য।
১৮৭

 হার্বি। তার আর আটক কি?

 এই বলিয়া হার্বি চৌকির উপর উঠিয়া দাঁড়াইল; উঠিবামাত্র ব্রুসগুলি সুন্দর রূপে ঘুরিয়া কাপড় ঝাড়িতে লাগিল; কিন্তু উপকার টুপির ব্রুসটি যেমন তেমনি রহিল। যখন নিচের ব্রুসগুলির কার্য্য অর্দ্ধেক হইল, উপরের ব্রুসটি নামিয়া, টুপির চতুর্দ্দিকে বেগে বার দশ পনর ঘুরিয়া তফাৎ হইয়া পড়িল।

 হার্বি নামিয়া আসিয়া বলিল “কেমন মজার কল? উঠে একবার ব্রুস হয়ে এস।

 আমি। না, না, এখন থাক্। আর এক সময় তথন দেখা যাবে।

 হার্বি। তবে ভাই তুমি একটু বস; আাহারের উদ্যোগ কতদূর হইল একবার দেখিয়া আসি।

 হার্বি চলিয়া গেলে, কলটি নিরীক্ষণ করিয়া দেখিলাম। ইচ্ছা হইল একবার উঠিয়া দেখি কি রকম চলে। চারিদিকে চাহিয়া দেখিলাম ঘরে কেহই নাই। চৌকীর উপর উঠিলাম, ব্রুসগুলি পরিষ্কার রূপে কোট, পেণ্টুলেন ঝাড়িতে লাগিল। আর টুপির ব্রুস! ও বাবা! একি বিপদ! প্রাণ যায় যে!

 আমার যে মাথায় টুপি ছিল না তা মনেই নাই। ফলে এরূপ যন্ত্রণা কখন ভোগ করি নাই। উঃ। টুপির ব্রুস দুটি মুথের উপর যোড়া লাগিয়া গেল। ভিতরের দুটি আংটাদ্বারা কাণদুটিকে উত্তম রূপে চিম্‌টাইয়া মুথের চতুর্দ্দিকে ঘুরিতে লাগিল। নাকে যে চামড়া রহিল এরূপ বোধ হইল না। আমি যেন ছাঁওনা তলায় বর দাঁড়াইয়া রহিলাম। দুঃথের মধ্যে নাক কান মলা খাইলাম কিন্তু কন্যারত্ন লাভ হইল না। মনে করিলাম নীচু হইয়া পলাই। বাবারে! যেমন নিচু হইব, পশ্চাৎ হইতে কাপড় ঝাড়া ব্রুস দুটী দুই গুঁতা মারিয়া খাড়া করিয়া দিল। সৌভাগ্যক্রমে শীঘ্রই যন্ত্রণার শেষ হইল। নামিয়া দেখি, হার্বি এক কোনে দাঁড়াইয়া হাসিতেছে; হার্বির আর হাসি থামে না। আমি কাষ্ঠ হাসি হাসিয়া, সম্মুখের আরসিতে চেহারা দেখিলাম। প্রথমে হাসিবার চেষ্টা করিয়াছিলাম, এখন নিজের চেহারা দেখিয়া আর হাস্য সম্বরণ করিতে পারিলাম না। মাথার চুলগুলি পাকাইয়া মন্দিরের চূড়ার মতন হইয়াছে। আর আমার সখের হুইস্কারের এক ভাগ কলের সাহায্যে গিয়াছে, অপরাংশ নাসিকা রক্ষা করিতে ব্যস্ত।

 হার্বি কথঞ্চিৎ হাস্য সম্বরণ করিয়া বলিল “কি বিপদ! কলটা যে ঠিক আমার মাপের মতন; তা বুঝি ঠাওর নাই? আবার টুপি রাখিয়া উঠিতে গেলে কেন?” আমি বলিলাম যাক্ বেশ ব্রুস হওয়া গেল, আর ও কথায় কাজ নাই।”

 “এখন কাপড় ছাড়িবে এস, আহার প্রস্তুত।” এই বলিয়া হার্বি আমাকে উপরের একটি ঘরে লইয়া গেল।