বিদায়-আরতি
এক অরূপের অঙ্গ মোরা লিপ্ত পরস্পর,—
নাড়ীর যোগে যুক্ত আছি নইক স্বতন্তর;
একটু কোথাও বাজলে বেদন বাজে সকল গায়,
পায়ের নখের ব্যথায় মাথার টনক ন’ড়ে যায়;
ভিন্ন হ’য়ে থাক্ব কি, হায়, মন মানে না বুঝ,—
ছিন্ন হ’য়ে বাঁচতে নারি,—নই রে পুরুভুজ।
* * *
তফাৎ থেকে হিতের সাধন মোদের ধারা নয়,
ভিক্ষা দেওয়ার মতন দেওয়ায় ভর্বে না হৃদয়,
অনুগ্রহের পায়সে কেউ ঘেঁস্বে না গন্ধে,
আপন জেনে ক্ষুদ্ কুঁড়া দাও খাবে আনন্দে।
পরকে আপন জান্তে হবে, ভুল্তে আপন পর,—
অগাধ স্নেহ অসীম ধৈর্য্য অটুট নিরন্তর।
পিতার দৃঢ় ধৈর্য্য, মাতার গভীর মমতা
প্রত্যেকেরি মধ্যে মোদের পায় গো সমতা;
পিতার ধৈর্য্য মানব-সেবা কর্ব প্রতিদিন,
মাতার স্নেহ বিশ্বে দিয়ে শুধব মাতৃঋণ।
* * *
দীপ্তিহারা দীপ নিয়ে কে?—মুখটি মলিন গো!
চক্মকি কার হাতে আছে?— জাগাও ফুলিঙ্গ,—
জাগাও শিখা—সঙ্গীর সব মশাল জেলে নিক্,
এক-প্রদীপের প্রবর্ত্তনায় হোক আলো দশদিক্।
এক প্রদীপে দিকে দিকে সোনা ফলাবে,
একটি ধারা মরু-ভূমির মরম গলাবে।
* * *