করিয়া বিদ্যাসাগর মহাশয় একটু অসন্তুষ্ট হইয়া ভৃত্যকে ডাকিয়া বলিলেন, “ভিক্ষাজন্য স্থানীয় চাউল লইবে, এ চাউল এখানে পাওয়া যায় না, ফুরাইলে বড় কষ্ট হইবে, এচাউল লইও না।” তদুত্তরে বিদ্যাসাগর মহাশয় যাহা শুনিলেন তাহাতে তাঁহার জীবনের গতি ফিরিল, প্রকৃত জ্ঞানোদয় হইল। ভৃত্য বলিল, “মহাশয় ভিক্ষার জন্য তিন মুষ্টি চাউল লই নাই, আপনার আহারের জন্যই লইয়াছি।” এই কথা বলিয়া ভৃত্য কার্য্যান্তরে চলিয়া গেল। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের হৃদয়তন্ত্রীতে আঘাত লাগিল। কথা সামান্য, কিন্তু সময়ে সময়ে ঐরূপ সামান্য কথায় বড় একটা বিপর্য্যয় ঘটিয়া যায়। এমনি একটী সামান্য কথা, “দিন আখের হুয়া,” শুনিয়া পাইকপাড়া রাজবংশের পরম শ্রদ্ধাস্পদ পূর্ব্বপুরুষ, স্বনামখ্যাত, লালা বাবু বৈরাগ্য অবলম্বন করেন এবং বহুবিধ সৎকর্ম্মানুষ্ঠান করিয়া বৃন্দাবনধামে নিজ কীর্ত্তিকলাপ স্থাপন করিয়া যান। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের ভৃত্যের সেই কথা কয়টীর যে ফল ফলিল তাহা অতি মহৎ,
পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রবন্ধ - শিবাপ্রসন্ন ভট্টাচার্য.pdf/১৭
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিদ্যাসাগর-প্রবন্ধ।
১৩
