পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/১১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সরকারের বে-সরকারী পরামর্শদাতা
৮১

সম্বন্ধে ছোটলাটের মতে সায় দিয়াছেন। এজন্য বিদ্যাসাগরকে দেশবাসীর নিকট হইতে বহু গালাগালি সহ্য করিতে হইয়াছিল। তিনি ছোটলাটকে এই পত্র লিখিলেন,—

“সংস্কৃত-শিক্ষা প্রচারে যাঁহারা আগ্রহশীল, হিন্দুসমাজের এমন-সব প্রধান ব্যক্তিগণের সহিত পরামর্শ করিতে আমাকে বলা হইয়াছিল। লোকের এইরূপ ধারণা জন্মিতে পারে যে প্রস্তাবগুলি আমার নিকট হইতে আসিয়াছে। সেজন্য আমি আপনাকে স্মরণ করাইয়া দেওয়া কর্ত্তব্য মনে করি যে, স্মৃতি-অধ্যাপনার ব্যবস্থা সম্বন্ধে প্রস্তাব আমার নিকট হইতে আসে নাই। বস্তুতঃ আমি আপনাকে পরিষ্কার করিয়া বলিয়াছিলাম, বিষয়ের গুরুত্ব বিবেচনা করিলে স্মৃতির একজন স্বতন্ত্র অধ্যাপক দরকার; এখনও আমার সেই মত। আপনি জানেন, স্মৃতিশাস্ত্রের বিষয়বস্তু বিপুল, সারাজীবনের চেষ্টায় ইহা শিখিতে হয়। একথা সত্য, এমন কেহ কেহ আছেন, সংস্কৃতসাহিত্যে যাঁহাদের জ্ঞান গভীর এবং স্মৃতিশাস্ত্রেও যাহাদের পাণ্ডিত্য প্রগাঢ়; কিন্তু এইরূপ বহুমুখী জ্ঞান অল্পই দেখা যায়। অন্য বিষয়ের অধ্যাপক পদের সহিত স্মৃতির পদ এক করিয়া ফেলিলে এই বিষয়টিকে খাটো করা হইবে এবং ইহার কার্যকারিতাও কমিয়া যাইবে, কেন-না যে-অধ্যাপক অবসর-মত ইহা পড়াইবেন তিনি বিষয়ের বিপুলতা অনুসারে ইহাতে যতটা মনোেযাগ দেওয়া দরকার তাহা দিতে পারিবেন না। আমি সরকারী পত্রে দেখিয়াছি, কলেজের অধ্যক্ষের মতে ‘অপরাপর কাজ করিয়াও অধ্যাপক মহাশয় এখন অত্যন্ত সন্তোষজনকভাবে স্মৃতিশাস্ত্র পড়াইয়া থাকেন।’ ভূতপূর্ব্ব অধ্যক্ষ হিসাবে কলেজের কাজে যতদুর অভিজ্ঞতা আছে, তাহাতে আমি এই মত সমর্থন করিতে পারি না। যিনি কলেজে আইন পড়িয়াছেন মাত্র, কিন্তু শুধু আইনই যাঁহার গভীর অধ্যয়নের