পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/১১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সরকারের বে-সরকারী পরামর্শদাতা
৮৩
সম্পর্কে অতি অনির্দ্দিষ্টভাবে আমার নামের উল্লেখে সাধারণের মনে যে ভ্রমাত্মক ধারণা জন্মিতে পারে, তাহা অপনীত করিলে আমার প্রতি সুবিচার করা হইবে।” (২৩ মে, ১৮৭২)

 বিদ্যাসাগরের পত্রে কোনোই ফল হয় নাই। তবে এই ব্যাপারে ছোটলাট তাঁহাকে সম্পূর্ণরূপে দোষমুক্ত করিয়াছিলেন। তিনি সমস্ত চিঠিপত্র ১অই জুন তারিখের ‘হিন্দু পেটি য়ট’ পত্রে প্রকাশিত করিয়া জনসাধারণের মন হইতে তাঁহার সম্বন্ধে ভুল ধারণা অপসারিত করিয়াছিলেন।

গণশিক্ষা

 জনসাধারণের জন্য অল্প খরচার বিদ্যালয়ের কিরূপ ব্যবস্থা করা যায় সেই বিষয়ে এবং সাধারণভাবে বাংলা-শিক্ষার বিস্তার ও উন্নতিসাধনের উপায় সম্বন্ধে ভারত-সরকার বাংলার ছোটলাট গ্র্যাণ্ট সাহেবের মতামত জিজ্ঞাসা করিলেন। নিজের মত প্রকাশ করিবার পূর্ব্বে ছোটলাট শুধু শিক্ষা বিভাগের কর্ম্মচারীদের নহে, গ্রাম্য বিদ্যালয় সম্বন্ধে যাঁহাদের অভিজ্ঞতা আছে অথবা কৃষকের কল্যাণসাধনে যাঁহারা সচেষ্ট এরূপ কয়েকজন ইউরোপীয় এবং ভারতবর্ষীয় ভদ্রলোকের বক্তব্য জানিতে চাহিলেন। ইহার মধ্যে পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর একজন। বিদ্যাসাগর এ বিষয়ে ছোটলাটকে যাহা লিখিয়াছিলেন তাহার সারাংশ নিয়ে উদ্ভূত হইল:—

“...সরকার যে ভাবিয়াছেন বিদ্যালয়-পিছু মাসিক পাঁচ-সাত টাকা মাত্র ব্যয় করিয়া কোনো শিক্ষা-পদ্ধতির প্রবর্ত্তন করিবেন, আমার মতে দেশের বর্ত্তমান অবস্থায় তাহা কার্য্যকর হইবার কোনো সম্ভাবনা নাই। পাঠ, লিখন এবং কিঞ্চিৎ গণিত শিখাইতে যাঁহারা কোনরূপে সমর্থ, নিজ নিজ গ্রামের প্রতি আকর্ষণ যতই থাক এমন যৎসামান্য বেতনে তাঁহাদিগকে কার্য্যগ্রহণে প্রবৃত্ত করিতে পারা যাইবে না...