পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/১২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বাধীন কর্মক্ষেত্রে
৯৩

আর্টস্ পর্য্যন্ত পড়িতে পারা যাইবে, ইহা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুর করিলেন। ১৮৭৪ সালে ফার্ষ্ট আর্টস্ পরীক্ষায় মেট্রোপলিটান ইনষ্টিটিউশন গুণানুসারে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করিল। দেশীয় লোকের পরিচালিত প্রতিষ্ঠানের এই সাফল্য দেখিয়া সকলেই বিস্ময়ান্বিত হইয়াছিল। প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যক্ষ ও কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার সাট্‌ক্লিফ সাহেব বলিয়াছিলেন,—“পণ্ডিত তাক্ লাগাইয়া দিয়াছেন!” ১৮৭৯ খৃষ্টাব্দে মেট্রোপলিটান ফার্ষ্ট গ্রেড কলেজে পরিণত হইল, এবং ১৮৮১ খৃষ্টাব্দে এখান হইতে ছাত্রেরা বি. এ. পরীক্ষা দিতে প্রেরিত হইল। পত্মীক্ষার ফল ভালই হইল।

 ইউরোপীয় শিক্ষকের সাহায্য ব্যতীত কোনো কলেজ যে ভাল চলিতে পারে অথবা অধ্যাপনা ভাল হইতে পারে, ইহা লোকের ধারণার অতীত ছিল। বিদ্যোগর নিজের কলেজে ভারতীয় অধ্যাপক নিযুক্ত করিয়া দেখাইলেন, কলেজের অধ্যাপনায় বিলাতী অধ্যাপকেরাই সর্বশ্রেষ্ঠ নয়, ভারতীয় শিক্ষকের দ্বারা অনুরূপ, এমন কি কোনো কোনো বিষয়ে উৎকৃষ্টতর শিক্ষার ব্যবস্থা প্রবর্ত্তিত করা যাইতে পারে। মেট্রোপলিটানের সাফল্য দেখিয়া অন্যান্য কলেজ হইতে অনেক ছাত্র এই কলেজে ভর্তি হইতে লাগিল। বিদ্যাসাগর মহাশয় শিক্ষা বিস্তারের এক নূতন দিক খুলিয়া দিলেন। সত্য কথা বলিতে কি, বে-সরকারী কলেজ প্রতিষ্ঠার তিনিই প্রবর্তক। তিনি যখন যে-কাজে হাত দিতেন, সে-কাজ সার্থক না করিয়া ক্ষান্ত হইতেন না। তা ছাড়া শিক্ষা-বিষয়ে তাঁহার অভিজ্ঞতা ছিল বিপুল। সারা বাংলার শিক্ষা বিস্তারে যে-প্রতিভা নিযুক্ত ছিল, তাহা একটি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে কেন্দ্রীভূত হওয়াতে, সেই প্রতিষ্ঠান অতুলনীয় সফলতা লাভ করিল।