দয়া-দাক্ষিণ্য
দরিদ্র এবং আর্ত্তের সহায়, দয়ালু দাতা এবং জনহিতৈষী রূপে বিদ্যাসাগরের তুলনা নাই। এই মহদ্গুণের জন্য আজ তিনি প্রাতঃস্মরণীয়। কাহাকেও বিপন্ন দেখিলেই তাঁহার প্রাণ কাঁদিয়া উঠিত এবং লোকের দুঃখ দুর করিবার জন্য তিনি প্রাণপণ চেষ্টা করিতেন। আজও তিনি দেশবাসীর নিকট “দয়ার সাগর বিদ্যাসাগর” নামে পরিচিত। দুঃস্থ এবং অভাবগ্রস্ত ব্যক্তিদের সাহায্য করিতে তাঁহার আয়ের অধিকাংশই ব্যয়িত হইত। তাঁহার সাহায্যেই বহু দরিদ্র বিধবার সংসার চলিত। শত শত অনাথ বালকের প্রতিপালন ও শিক্ষার ভার তিনি নিজের স্কন্ধে গ্রহণ করিয়াছিলেন। গৃহে গৃহে তাঁহার নাম শ্রদ্ধাভরে উচ্চারিত হইত। ধনী দরিদ্র নির্ব্বিশেষে সকলেই তাঁহাকে ভালবাসিত। শুধু বন্ধু এবং সহকৰ্মীরাই নয় তাঁহার রিরুদ্ধবাদীরাও তাঁহাকে শ্রদ্ধা করিত। তাঁহার সাহস ছিল অতুলনীয় এবং দাক্ষিণ্য অপূর্ব্ব। অথচ তিনি নিজে নিতান্ত সরল জীবন যাপন করিতেন। এই তেজস্বী দানবীর সরল ব্রাহ্মণ পণ্ডিতের কাছে বড় বড় জমিদারের মাথা আপনি নত হইয়া পড়িত। বাংলার তদানীন্তন ছোটলাট স্যর সিসিল বীডন এই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষাব্রতীর সহিত প্রায়ই পরামর্শ করিতেন, এবং তাঁহার সঙ্গে আলাপ করিতে বড়ই আনন্দ পাইতেন।
রাজসম্মান
অবসরগ্রহণের বিশ বৎসর পরে ১৮৮০ সালে নববর্ষের প্রথম দিনে ভারত-গভর্ন্মেণ্ট তাঁহাকে সি. আই. ই. উপাধিতে ভূষিত করেন। এই উপাধিদানে বিদ্যাসাগর ন’ন সরকার নিজেই সম্মানিত হইয়াছিলেন। তৎপূর্ব্বে (১৮৬৪, ৪ জুলাই) বিদ্যাসাগর বিলাতের রয়েল এশিয়াটিক