সামাজিক বিষয়ে তাঁহার অসাধারণ ঔদার্য্য ছিল। কাহাকেও তিনি ঘৃণা করিতেন না, কাহাকেও তিনি হীন বলিয়া মনে করিতেন না। সকলের সহিত তিনি সমানভাবে মিশিতেন, বড়লোক ছোটলোক অথবা উচ্চজাতি অবর জাতি বাছিতেন না। নিজেকেও তিনি কাহারও কারণ খাটো করিতেন না। যে তাঁহাকে শ্রদ্ধা করিত তাহার সহিত তিনি বন্ধুবৎ আচরণ করিতেন, এবং যে তাঁহার প্রতি অসম্মানের সহিত ব্যবস্থা করিত, ইংরেজ অথবা উচ্চপদস্থ কর্ম্মচারী হইতেও তিনি তাহার প্রতি অরূপ আচরণ করিতে ছাড়িতেন না। এইখানে পণ্ডিত শিবনাথ শাস্ত্রীর কথাগুলি মনে পড়ে:—
সামাজিক আচরণে ঈশ্বরচন্দ্রের কোনরূপ সঙ্কীর্ণতা ছিল না। ধর্ম্ম- সম্বন্ধেও তাঁহার কোনরূপ গোঁড়ামি ছিল না। সব জিনিষ তিনি যুক্তি দিয়া পরখ করিতেন। ‘শাস্ত্রে আছে’—ইহাই তাঁহার কাছে শেষকথা ছিল না। তাঁহার মতামত খুব স্পষ্ট ছিল। এমন কি বেদান্তকে তিনি ভ্রান্ত দর্শন বলিতেন।
তিনি নিজের কর্ম্মক্ষেত্র বাছিয়া লইয়াছিলেন। সমাজ তাঁহার কর্ম্মক্ষেত্র। রাজনৈতিক আন্দোলনে তিনি বড়-একটা যোগ দিতেন না।
- ↑ “রামতনু লাহিড়ী ও হংকালীন বঙ্গসমাজ”—শিবনাথ শাস্ত্রী। পৃ.২০৮