পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

২০

তাঁহাদিগকে এক একটি মাদুর পাতিয়া দিলেন, তাঁহারা বসিয়া প্রায় দুই ঘণ্টা গল্প করিলেন। কত কি কথা হইল, আমরা বড়-কিছু বুঝিতে পারিলাম না। দুটি ঘরের দরজা দিয়া ছাতে যাওয়া যাইত। দরজার আড়ালে দাঁড়াইয়া দাঁড়াইয়া বিদ্যাসাগরকে দেখিতে লাগিলাম। সন্ধ্যা হব-হব সময় তাঁহারা উঠিয়া গেলেন। শুনিলাম তিনি অমৃতলাল মিত্রের বৈঠকখানার পাশে বাঁড়ুয্যেদের চণ্ডীমণ্ডপে স্কুল বসাইয়া গিয়াছেন।

অমৃতলাল বসুর ‘বিবাহ-বিভ্রাট’

 ১৮৮৮ কি ৮৯ সালে আমি একদিন বিদ্যাসাগর মহাশয়কে দেখিতে গিয়াছিলাম। দেখিলাম তিনি একাই আছেন। তখন তিনি বৃন্দাবন মল্লিকের লেনে নিজ বাড়িতেই থাকেন। বাড়ির উত্তর দিকে দোতলাতে যে তিনটি ঘর ছিল, তাহার পশ্চিমের ঘরে তিনি বসিয়া ছিলেন। কথা উঠিল—বঙ্কিম বেশী সংস্কৃত লেখেন, না বিদ্যাসাগর লেখেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় বলিলেন—বারাসতে কালীকৃষ্ণ মিত্রের বাড়ি একদিন এই কথা উঠিয়াছিল। তাহার পর বলিলেন—ছাপাখানায় ‘এম্’ কা’কে বলে তুই জানিস? আমি বলিলাম—না। তিনি আমাকে ‘এম্’ বুঝাইয়া দিলেন। তারপর বলিলেন—কালীকৃষ্ণ মিত্র বঙ্কিমের একখানা ও আমার একখানা বই আনিলেন। আমার বইয়ে যতগুলো ‘এম্’ ছিল বঙ্কিমের বইয়েরও ততগুলো ‘এম্’ লইলেন। তাহার পর কথা গণিতে লাগিলেন। আমার সেইটুকুতে ৫৫টা সংস্কৃত কথা ছিল, আর বঙ্কিমের ৬৫টা। আমি কালীকৃষ্ণবাবুকে দেখাইয়া দিলাম—এই ত, কার সংস্কৃত বেশী দেখ; তার ওপর আমি সংস্কৃত শব্দ সংস্কৃত অর্থে ব্যবহার করিয়াছি, আর উনি অসংস্কৃত অর্থে ব্যবহার করিয়াছেন। দেখিলাম বিদ্যাসাগর মহাশয় একটু