পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

২২

 গর্ভাঙ্ক শেষ হইয়া গেল। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের হাসিও ফুরাইল। আমি তখন মনে করিলাম—বিদ্যাসাগর মহাশয় একজন মান্যগণ্য ব্যক্তি, তাঁহার সঙ্গে এরকম ফাজ্‌লামোটা ভাল হয় নাই। তিনিও তাহা বুঝিলেন, বুঝিয়াই বলিলেন—এ বই কার লেখা? আমি বলিলাম গ্রন্থকার কে আমি জানি না। শুনিলাম তিনি বাগবাজারের থিয়েটারপার্টির একজন। আমি জিজ্ঞাসা করিলাম—কেমন? আপনার এ বই ভাল লাগলো? তিনি বলিলেন—খুব। আমি বলিলাম—তবে আপনাকে একখানি বই আনাইয়া দিব। পরের দিন দোকানে দোকানে ঘুরিয়া একখানি বই সংগ্রহ করিলাম। বইখানি লইয়া বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বাড়ি গেলাম। দেখিলাম—টেবিলের উপরে রাশিকৃত বই কাগজ ছড়ানো রহিয়াছে। আমাকে দেখিয়াই জিজ্ঞাসা করিলেন—বই এনেছিস্ না-কি? আমি, বইখানি তাঁহার সাম্‌নে রাখিলাম। বিদ্যাসাগর মহাশয় বলিলেন— বইখানা রেখে যা। তোর সঙ্গে আজ আর প’ড়ে উঠতে পাচ্ছি না। আজ ভারী ব্যস্ত।

 কি করি! অত্যন্ত মনমরা হইয়া সেদিন ফিরিয়া আসিলাম।

শেষ অবস্থা

 ১৮৯১ সালের শ্রাবণ মাসের প্রথম রবিবারে আমি শুনিলাম— বিদ্যাসাগর মহাশয় হাওয়া-বদলির জন্য ফরাসডাঙ্গার গঙ্গাতীরে একটি বাড়িতে আছেন। ফরাসডাঙ্গায় গবর্ন্মেণ্ট হাউসের দক্ষিণে কতকগুলি বাড়ি আছে, একেবারে গঙ্গার ওপরেই। অনেক কলিকাতার লোক দেখানে হাওয়া বদল করিতে যায়। এবার বিদ্যাসাগর মহাশয় উহারই একটি বাড়িতে ছিলেন। আমার তখন সাধ হইয়াছিল যে বিদ্যাসাগর মহাশয় যখন এত কাছে আছেন, তখন একদিন তাঁকে বাড়িতে আনিয়া