পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

২৪

একবার এ-আঁবের এক চাক লা দেন, একবার ও-আঁবের এক চাক লা দেন,—পাঁচ-সাত রকমের আঁব তাঁহাকে খাওয়াইলেন। কর্ম্মাটাঁড়ে ভুট্টা দেখিয়াছিলাম, এখানে দেখিলাম আঁব।

 আশুবাবু উঠিয়া গেলে বিদ্যাসাগর মহাশয় আমাকে জিজ্ঞাসা করিলেন—তুই এখানে কোথা এসেছিলি? আমি বলিলাম—আপনি এত কাছে আছেন, তাই মনে করিয়াছি, যদি আপনার পায়ের ধূলা আমার বাড়িতে পড়ে। বিদ্যাসাগর বলিলেন—কিন্তু তুই যে এদিক দিয়ে এলি? আমি ভাবিলাম—দুষ্টু বুড়া তাও দেখিয়াছে। বলিলাম—আপনার এখানে আসিব বলিয়াই বাহির হইয়াছিলাম, পথে একটা কথা মনে হওয়ায় মুখুজ্জ্যেদের ইটখোলায় গিয়াছিলাম। তা আপনি যেতে পারবেন কি? গেলে আমরা কৃতার্থ হব। তিনি বলিলেন— কেন? তুই আমাকে ঘটা করিয়া খাওয়াইবি না কি? আমি বলিলাম— সে ভাগ্য কি আমার হবে? তিনি বলিলেন—তাই তু আমি বলিতেছিলাম; আমি কি খাই তা জানিস্? বেলশুঁঠোর সঙ্গে বার্লি সেদ্ধ ক’রে তাই একটু একটু খাই। তবে যে এই আঁব দেখছিস্, ও আমার জন্যে নয়। যে নিজে কিছু খেতে পারে না, অন্যকে খাইয়েই তার তৃপ্তি। তাই ত আশুকে অত ক’রে নিজে হাতে আঁব খাওয়াচ্ছিলাম। যা হোক, তুই এসেছিস্, ভালই হয়েছে। কিন্তু আমি তোকে জিজ্ঞাসা করবো না, তোর বাড়ির কে কেমন আছে, হয়ত তুই বলবি—অমুক মারা গিয়েছে, অমুক ব্যামোয় ভুগছে, এসব কথা শুনতে আর আমার ইচ্ছে হয় না। আমার বড় কষ্ট হয়। আমি বলিলাম—ঈশ্বরের ইচ্ছায় আমাদের ওখানকার সব সংবাদই ভাল। তারপর তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন— বাড়িতে পায়ের ধুলোর কথা বলছিলি, তোরা কি নতুন বাড়ি করেছিস্ না কি? আমি বলিলাম—একটু কুঁড়ে বেঁধেছি বইকি। তিনি বলিলেন— আমি গেলে আমায় কি খাওয়াইতিস? আমি বলিলাম—বাড়ির মেয়েরা