পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সংস্কৃত কলেজের পুনর্গঠন
১৩

অধ্যাপনা চলিত—ভাস্করাচার্যের ‘লীলাবতী’ ও ‘বীজগণিত’ ছাত্রদিগকে পড়িতে হইত। বিদ্যাসাগর ইহা উঠাইয়া দিয়া অতঃপর ইংরেজীতেই গণিতের শিক্ষা প্রবর্তন করিলেন। এখন হইতে ইংরেজী অবশ্যশিক্ষণীয় বিষয়-সমূহের অন্তর্গত করা হইল।

 বিদ্যাসাগর যখন এই-সব সংস্কারে ব্রতী, সেই সময় শিক্ষা-পরিষদ কাশীর সরকারী সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ—বিখ্যাত পণ্ডিত ডাঃ জে. আর. ব্যালাণ্টাইনকে কলিকাতার সংস্কৃত কলেজ পরিদর্শন করিবার জন্য আহ্বান করিতে চাহিলেন। পরিষদ এই সম্পর্কে সরকারকে শিখিলেন:—

“বর্ত্তমান সুযোগ্য উদ্যোগী অধ্যক্ষের নিয়োগ অবধি সংস্কৃত কলেজে বহুবিধ গুরুতর সংস্কারের প্রবর্ত্তন হইয়াছে,—সরকার ইহা অবগত আছেন। ফল ইহাতে ভালই হইতেছে বলিয়া মনে হয়। এখনকার তত্ত্বাবধানে বিদ্যালয়ের এক অতিপ্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হইবার সম্ভাবনা আছে। সুতরাং বর্ত্তমানে যে-সব পরিবর্ত্তন সাধিত হইতেছে এবং ভবিষ্যতের জন্য যাহা সঙ্কল্পিত আছে, সে সম্বন্ধে বর্ত্তমানে ভারতবর্ষের শ্রেষ্ঠ সংস্কৃত-পণ্ডিতের মত জানিবার জন্য শিক্ষা-পরিষদ বিশেষ ইচ্ছুক।” (২১ মে, ১৮৫৩)[১]

 শিক্ষা-পরিষদের নিমন্ত্রণে ডাঃ ব্যালাণ্টাইন কলিকাতা সংস্কৃত কলেজ পরিদর্শন করিতে আসিলেন (জুলাই-আগষ্ট)। পরিদর্শনান্তে একটি রিপোর্ট পরিষদে পেশ করিলেন:—

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের খ্যাতির কথা শুনিয়া এবং কলিকাতা সংস্কৃত কলেজ-সম্পর্কে তৎপ্রদত্ত রিপোর্ট পাঠ করিয়া তাঁহার সম্বন্ধে যে ধারণা জন্মিয়াছিল, এই সুধী অধ্যক্ষের সহিত সাক্ষাৎ আলাপে আমার সে ধারণা দৃঢ়তর হইল,—এই আলাপে আমি যথেষ্ট আনন্দলাভ করিলাম।”

  1. General Dept. Con. 16 June 1853, No. 43.