পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪
বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ

 কলেজের পঠন-ব্যবস্থা প্রভৃতির বিষয়ে বিশেষ সন্তোষ প্রকাশ করিবার পর তিনি কাশী ও কলিকাতা—এই উভয় সংস্কৃত কলেজের অবস্থার তুলনামূলক সমালোচনা করিয়া বারাণসীতে আবশ্যিক ইংরেজী শিক্ষা প্রবর্তিত করা যে সম্প্রতি অসমীচীন, এই মত প্রকাশ করেন।

 তারপর কলিকাতা সংস্কৃত কলেজে নূতন কতকগুলি পুস্তক প্রবর্ত্তন ও ছাত্রদের ভাবগ্রহণ করিবার শক্তি সম্বন্ধে তিনি যে মতামত প্রকাশ করেন, তাহা বিদ্যাসাগরের পরবর্ত্তী রিপোর্ট হইতে জানা যাইবে। নিম্নলিখিত মন্তব্য প্রকাশ করিয়া ডাঃ ব্যালাণ্টাইন তাঁহার রিপোর্ট শেষ করিয়াছেন:—

“ভারতীয় পাণ্ডিত্য ও ইংরেজী বিজ্ঞানের মধ্যে যে প্রভেদ বর্ত্তমান, তাহা ঘুচাইবার জন্যই আমি এই-সকল কথার মবতারণা করিয়াছি।... কলেজে সংস্কৃত ও ইংরেজী এই উভয়বিধ পাঠ্যই পড়িতে হয় বটে, কিন্তু বর্ত্তমান অবস্থায় উভয় ভাষার শাস্ত্রে কোথায় মিল, কোথায়, অমিল—তাহা সংস্কৃত কলেজের ছাত্রদের নিজেদেরই ঠিক করিয়া লইতে হয়। ছাত্রদের অবধারণ যে সন্তোষজনক নয়, ইহা পূর্ব্বেই বলিয়াছি এবং সেইজন্যই কলেজের নির্দিষ্ট পাঠ্য ছাড়া অতিরিক্ত আরও যে যে গ্রন্থের প্রচলন প্রয়োজন, তাহার প্রস্তাব করিয়াছি,... ”

 শিক্ষা-পরিষদ ডাঃ ব্যালাণ্টাইনের রিপোর্ট বিদ্যাসাগরের নিকট পাঠাইয়া দিলেন (২৯ আগষ্ট, ১৮৫৩)। বিদ্যাসাগর ডাঃ ব্যালাণ্টাইনের বর্ণিত প্রণালীর সমর্থন করিতে না পারিয়া পরিষদের নিকট নিম্নলিখিত উত্তর প্রেরণ করিলেন:—

“বিদ্যালয়ে যে-সকল ব্যবস্থা সম্প্রতি প্রবর্তিত হইয়াছে, তাহা ডাঃ ব্যালাণ্টাইনের মত গুণী লোকের অনুমোদন লাভ করিয়াছে দেখিয়া আমি অত্যন্ত সুখী হইয়াছি।