পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২
বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ

ছিল। নব্য ইউরোপীয়ের মত বিদ্যাসাগরের দৃষ্টির পরিধি ছিল সঙ্কীর্ণ। ব্যাবহারিক জীবনে প্রয়োজনীয়তা, অপ্রয়োজনীয়তা দিয়া তিনি সকল কাজের মূল্য বিচার করিতেন এবং সকল কর্ম্মানুষ্ঠানেই ‘জন্ বুল’-এর জিদ ও অদম্য উৎসাহ দেখাইতেন।

 শিক্ষা-পরিষদ সব দিক বিবেচনা করিয়া নিম্নলিখিত মক্তব্য প্রকাশ করিলেন:—

“ডাঃ ব্যালাণ্টাইন সংস্কৃত কলেজের বর্তমান শিক্ষা-ব্যবস্থা ও উন্নতির সম্বন্ধে এমন অনুকূল মত প্রকাশ করিয়াছেন দেখিয়া শিক্ষা-পরিষদ আনন্দিত।...পরিষদ চান যে, অধ্যক্ষ বিদ্যাসাগর ডাঃ ব্যালাণ্টাইনের সংক্ষিপ্ত-সার ও অন্যান্য গ্রন্থ অবাধে ব্যবহার করেন। তাঁহার নিজের ও তাঁহার অধীন শিক্ষকদের পাঠনার অন্তর্গত বিষয়-সমূহের অর্থ বুঝাইবার ও উদাহরণ দিবার জন্য এগুলি অত্যন্ত কাজে লাগিবে। ডাঃ ব্যালাণ্টাইনের গ্রন্থের সহিত পরিচয়ে এইসব বিষয়ের শিক্ষার্থিগণ যথেষ্ট উপকৃত হইবে। তাঁহার বিদ্যালয়ের উন্নতি সম্বন্ধে অধ্যক্ষ যেন ডাঃ ব্যালাণ্টাইনের সহিত সর্ব্বদা পত্র-ব্যবহার করেন। কাশী ও কলিকাতা—এই দুইটি প্রধান বিদ্যালয়ের কর্তারা শিক্ষা-ব্যবস্থার ক্রমিক উন্নতি সম্বন্ধে অবাধে মতের বিনিময় করেন—ইহাই শিক্ষাপরিষদের ইচ্ছ।” (১৪ সেপ্টেম্বর, ১৮৫৩)

 সংস্কৃত কলেজ নুতন করিয়া গড়িবার জন্য বিদ্যাসাগর প্রাণপণ চেষ্টা করিতেছিলেন। এমন সময় শিক্ষা-পরিষদের এই আদেশ তাঁহার ক্রোধ উদ্দীপ্ত করিয়া তুলিল। তিনি নিজ কার্য্যে অন্যের হস্তক্ষেপ সহিতে পারিতেন না এবং যাহা ঠিক বলিয়া মনে করিতেন, তাহা হইতে এক চুলও নড়িতেন না। ১৮৫৩, ৫ই অক্টোবর শিক্ষা-পরিষদের সম্পাদক ডাঃ ময়েটকে লিখিত এই আধা-সরকারী চিঠিখানি হইতে তাহার প্রমাণ পাওয়া যাইবে:—