পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সংস্কৃত কলেজের পুনর্গঠন
২৩
“ডাঃ ব্যালাণ্টাইনের রিপোর্ট-সম্পর্কে শিক্ষা-পরিষদের আদেশ স্থিরভাবে বিবেচনা করিয়া দেখিলাম; সেই আদেশগুলি হবহু প্রতিপালন করিতে গেলে, পরিষদের অনুমতিক্রমে যে শিক্ষা-ব্যবস্থা সম্প্রতি সংস্কৃত কলেজে প্রবর্ত্তন করিয়াছি, তাহাতে অযথা হস্তক্ষেপ করা হইবে। ফলে কলেজে আমার অবস্থা কতকটা অপ্রীতিকর, এবং বিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয়তার দিক দিয়াও ক্ষতিকর হইবে।

“কলেজ বন্ধ এবং বাড়ি যাইবার উদ্যোগ-আয়োজনের ব্যস্ততার দরুণ আমি এবিষয়ে সরকারী চিঠি লিখিতে পারিলাম না। ডাঃ ব্যালাণ্টাইনের নির্দিষ্ট ব্যবস্থা কার্য্যে পরিণত করিবার বিরুদ্ধে কতকগুলি গুরুতর আপত্তি আমার মনে আসিয়াছে; কলিকাতা-ত্যাগের পূর্ব্বে তাহা আমি জানাইয়া যাইতে চাই।

“যে শিক্ষা-ব্যবস্থার আমি অনুমোদন করিতে পারি না তাহাই গ্রহণ করিতে, অথবা আমার সহপদস্থ একজন অধ্যক্ষের সহিত বিদ্যালয়ের উন্নতির সম্বন্ধে পত্র-ব্যবহার করিতে বাধ্য হওয়ার মধ্যে মর্যাদাহানির যে কথা আছে, এমন একটি গুরুতর বিষয়ের আলোচনা-প্রসঙ্গে সেই ব্যক্তিগত কথা সম্প্রতি আমি মিশাইতে চাহি না; এই-সব সুর্ত্তে কাজ করিতে কোনো শিক্ষিত ইংরেজই রাজী হইত না। ব্যক্তিগত আপত্তি ছাড়িয়া, প্রকৃত বিষয়ে অবতীর্ণ হইতেছি।

“মনে হয়, ডাঃ ব্যালাণ্টাইন এই ভাবিয়া মন্তব্য করিয়াছেন যে তাঁহার প্রস্তাব অনুসারে কার্য্য না হইলে ইংরেজী সংস্কৃতের ছাত্রের ‘দুইরূপ সত্যের’ অনুবর্তী হইয়া পড়িবে। তাঁহার কাশীর পণ্ডিত-বন্ধুগণের মনোবৃত্তির সম্বন্ধে আমি কোনো প্রশ্ন তুলিব না। কিন্তু একথা আমি জানি এবং জোর করিয়া বলিতে পারি, বঙ্গদেশে এমন একজনও বুদ্ধিমান লোক খুঁজিয়া পাওয়া যাইবে না যিনি সংস্কৃত ও ইংরেজীতে শিক্ষিত হইয়া মনে করেন, ‘সত্য দুই প্রকার।’