পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করার সময় সমস্যা ছিল।

ব্রজেন্দ্রবাবুকে তাঁহারা বিশ্বাস করেন, ব্রজেন্দ্রবাবুও কোন গােপন সংবাদ দেন না। বাঙালীরা যে-সকল সংবাদ পাইবার জন্য উৎসুক, অথচ পায় না, কেবল সেই সকল সংবাদই দেন। ব্রজেন্দ্রবাবু এইরূপে গবর্ন্মেন্টের রেকর্ড হইতে বাঙ্গালীদের ইতিহাস বাহির করিয়া বেশ যশ অর্জ্জন করিয়াছেন। তাঁহার বয়স এমন বেশী নয়। ইনি এই লাইনে আরও অনেক কাজ করিতে পারিবেন বলিয়া আমাদের বিশ্বাস।

 বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গে ব্রজেন্দ্রবাবু তাঁহার চাকুরিজীবনের সকল কথাই বলিয়াছেন। সংস্কৃত পাঠশালা হইতে বাহির হইয়া তিনি প্রথম ফোর্ট উইলিয়ম কলেজের বাংলা-বিভাগের সেরেস্তাদার হন; সেখান হইতে তাঁহাকে আনিয়া তাঁহার মুরুব্বী মার্শাল সাহেব সংস্কৃত পাঠশালায় এসিষ্টান্ট সেক্রেটারী করেন, কিন্তু সেক্রেটারী রসময় দত্তের সঙ্গে বনিবনাও না হওয়ায় ছয় মাসের মধ্যে পদত্যাগ করেন ও আবার ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে ভাল চাকরি পান। দত্ত-মহাশয় অবসর গ্রহণ করিলে বিদ্যাসাগর মহাশয় পূরা সেক্রেটারী হন (১৮৫দুষ্পাঠ্য) এবং এক বৎসরের মধ্যে একখানি রিপাের্ট লিখিয়া গবর্ন্মেন্টে পাঠান; সে রিপাের্টের ফলে সংস্কৃত পাঠশালা কলেজ হইয়া যায়। তাহাতে কথা থাকে—তিন ভাগের দুই ভাগ সংস্কৃত ও এক ভাগ ইংরেজী পড়িবে। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের উদ্দেশ্য ছিল যে সংস্কৃত কলেজের ছাত্রেরাই বাংলা লিখিবে; সংস্কৃত ভাল না জানিলে সে লেখক দ্বারা বাংলার উন্নতি হইতে পারে না। সেই রিপাের্টের ফলে তিনিই সংস্কৃত কলেজের প্রিন্সিপাল হন। ৺প্রসন্নকুমার সর্ব্বাধিকারী ইংরেজী সাহিত্যের ও ৺শ্রীনাথ দাস ইংরেজী অঙ্কশাস্ত্রের অধ্যাপক হন। পূর্ব্বে যে পাঠশালা ছিল তাহার এক এক ঘরে এক এক জন সংস্কৃত অধ্যাপক বসিতেন, ছেলেরা তাঁহার কাছে পড়িতে যাইত। প্রথম ব্যাকরণের ঘরে পড়িত, তারপর সাহিত্যের ঘরে, তারপর অলঙ্কারের ঘরে, তারপর স্মৃতির ঘরে, তারপর ন্যায়ের ঘরে; কেহ কেহ জ্যোতিষের