পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ঘরেও পড়িত। প্রথম বার বছর ধরিয়া (সংস্কৃত পাঠশালায়) একটি বৈদ্যকেরও ঘর ছিল। সেখানকার অধ্যাপক মধুসূদন গুপ্ত ১৮৩৫ সালে মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হইলে পদত্যাগ করিয়া সেখানে পড়িতে যান এবং প্রথম ছুরি দিয়া মড়া কাটেন। প্রথম যেদিন তিনি ছুরি ধরেন, সেদিন নাকি তোপ হইয়াছিল। মধুসূদন পদত্যাগ করিলে বৈদ্যকের ঘর উঠিয়া যায়। বলিতে গেলে, সংস্কৃত পাঠশালায় বৈদ্যকের ঘর হইতেই মেডিকেল কলেজের সৃষ্টি। যাহারা বৈদ্যকের ঘরে পড়িত, তাহাদের একজন সাহেবের কাছে কেমিষ্ট্রি পড়িতে হইত, আর মরা পশুর দেহ কাটিয়া এনাটমি শিথিতে হইত; কিন্তু সাহেবের ঘর কলেজের বাড়িতে ছিল না; তাহার জন্য স্বতন্ত্র বাড়িভাড়া করিতে হইত। বৈদ্যকের ঘরের সঙ্গে সঙ্গে কেমিষ্ট্রি এনাটমিও উঠিয়া গেল।

 ১৮৫২ সালে বিদ্যাসাগর মহাশয় প্রিন্সিপাল হইলেন। তাহার কিছুদিন পরেই গবর্ন্মেণ্টের মতলব হইল দেশে বাংলা-শিক্ষা চালানো। দক্ষিণ-বাংলার জন্য বিদ্যাসাগর মহাশয় ইন্‌স্পেক্টার নিযুক্ত হইলেন। তিনি যখন ইন্‌স্পেক্টারের কাজ করিতে যাইতেন, তখন একজন ডেপুটীপ্রিন্সিপাল সংস্কৃত কলেজের কাজ দেখিত। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের কাজ করিবার ক্ষমতা অসীম ছিল। ইন্‌স্পেক্টারের কাজেও তাঁহার খুব যশ ও সুখ্যাতি হইল। তিনি গবর্ন্মেণ্টের একজন প্রিয় পাত্র হইয়া উঠিলেন। তাহার মাথা বেশ পরিষ্কার ছিল। তিনি হাতে-কলমে নিজে কাজ করিতেন বলিয়া অনেক জিনিষ তাঁহার উপরওয়ালার চেয়ে ভাল বুঝিতে পারিতেন। ক্রমে তাহাই লইয়া খুঁটিনাটি আরম্ভ হইল; আর গবর্ন্মেণ্ট বিদ্যাসাগর মহাশয়ের ইন্‌স্পেক্‌শনের কার্য্য স_ট করিয়া দিলেন। ইহা বিদ্যাসাগর মহাশয়ের ভাল লাগিল না। তিনি পদত্যাগ করিলেন। গবর্ন্মেণ্টের বড় বড় কর্ম্মচারীরা তাঁহাকে অনুরোধ করিলেন— তুমি থাক; কিন্তু তিনি থাকিলেন না। বাংলার প্রথম লেফ্‌টেন্যাণ্ট-গবর্ণর