পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০
বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ

ইনস্পেক্টর পদে নিযুক্ত করা হইল; ১৮৫৫, ১লা মে হইতে তিনি সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষতার উপর এই কাজে মাসে দুই শত টাকা বেতন পাইতে লাগিলেন। নিযুক্ত হইয়াই তিনি নিজের সাব-ইনস্পেক্টর[১] বাছিয়া লইলেন, এবং মডেল স্কুল স্থাপনের উপযুক্ত স্থান নির্ণয় করিবার জন্য তাঁহাদিগকে মফঃস্বলে পাঠাইলেন। প্রস্তাবিত নূতন বাংলা বিদ্যালয়গুলির শিক্ষক-নির্বাচনই হইল তাঁহার প্রথম কাজ। তিনি জানিতেন, এই-সব শিক্ষকের উপযুক্তরূপ জ্ঞানের উপরই সরকারী শিক্ষা-ব্যবস্থার সাফল্য নির্ভর করিতেছে। সংস্কৃত কলেজে বাংলা শিক্ষক নির্ব্বাচনের একটি পরীক্ষা গৃহীত হইবে বলিয়া তিনি ১৮৫৫, মে মাসে নোটিস বাহির করিলেন। নিকটবর্তী স্থানসমূহ হইতে দুই শতেরও অধিক পদপ্রার্থী পরীক্ষা দিয়াছিল। দেখা গেল আর কিছু শিক্ষা না পাইলে তাহাদের মধ্য অতি অল্পলোকই সরকারী মডেল স্কুলগুলির ভার লইতে সমর্থ হইবে। এমনি করিয়া শিক্ষকদের শিক্ষাদানের জন্য একটি নর্ম্মাল স্কুলের প্রয়োজনীয়তা নিঃসন্দেহে প্রতিপাদিত হইল। ‘পাঠশালা’ নামে একটি বাংলা স্কুল পূর্ব্বে হিন্দু কলেজের সহিত সংযুক্ত ছিল। এই সম্পর্কে সেটি যাহাতে তাঁহার তত্ত্বাবধানে আসে, বিদ্যাসাগরের অভিপ্রায় ছিল তাহাই। তিনি ডিরেক্টরকে বলিলেন, প্রতিষ্ঠানটি বিশেষ কাজে লাগিবে। যাহারা মফঃস্বল বিদ্যালয়গুলির শিক্ষক হইতে চায়, তাহারা ‘পাঠশালা’র শিখাইবার ও পরিচালন করিবার পদ্ধতি দেখিয়া ও কখনও কখনও নিজেরাও পড়াইয়া, শিক্ষকতা সম্বন্ধে অভিজ্ঞ হইয়া উঠিতে পারে। শুধু

  1. হরিনাথ বন্দোপাধ্যায়, মাধবচন্দ্র গোস্বামী, তারাশঙ্কর ভট্টাচার্য্য, এবং বিদ্যাসাগরের ভ্রাতা দীনবন্ধু ন্যায়রত্ন। ইঁহাদের বেতন ছিল—পথ-খরচা ছাড়া মাসিক এক শত টাকা।