পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
88
বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ

“এণ্ট্রান্স পরীক্ষার পাঠোপযোগী এক সংস্কৃত সহিত ইংরেজী স্কুল” প্রতিষ্ঠা ব্যাপারে দুইজন স্থানীয় ভদ্রলোক আর্থিক সাহায্যের জন্য তাঁহাকে লিখিলে তিনি অবিলম্বে তাহাদের জানাইয়াছিলেন,— “আপনাদিগের উদ্যোগে ঘাটালে যে বিদ্যালয় স্থাপিত হইতেছে উহার গৃহনির্ম্মাণ সম্বন্ধে যে ৫০০৲ পাঁচ শত টাকার অনাটন আছে আমি স্বতঃপরতঃ তাহা সমাধা করিয়া দিব সে বিষয়ে আপনারা নিশ্চিন্ত থাকিবেন তজ্জন্য অন্য চেষ্টা দেখিবার আর প্রয়োজন নাই।” (৬ই জুলাই, ১৮৬৮)[১] স্বগ্রামে তিনি বালকদের একটি অবৈতনিক বিদ্যালয় স্থাপিত করিয়াছিলেন (১৮৫৩)। দক্ষিণ-বাংলার স্কুল-সমূহের ইন্‌স্পেক্টর লজ্ সাহেব বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করিয়া এইরূপ মন্তব্য প্রকাশ করেন:—

“বীরসিংহ বিদ্যালয়:—এই স্কুলটি পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কর্ত্তৃক প্রতিষ্ঠিত এবং তাঁহারই সম্পূর্ণ ব্যয়ে পরিচালিত। একথা না বলিলে এই সুবিখ্যাত জনহিতৈষীর প্রতি অবিচার করা হয়; স্কুল-গৃহের জন্য তিনি বেশ উপযোগী স্থানে একখানি সুন্দর বাংলা প্রস্তুত করিয়া দিয়াছেন। ছয়-সাতজন শিক্ষকের বেতন তিনি নিজেই দেন। ছাত্রদের নিকট মাহিনা লওয়া হয় না, বিনামূল্যে তাহাদের সকল-রকম বই দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, পণ্ডিতের নিজের বাড়ীতে প্রায় ৩০জন দরিদ্র ছেলের আহারের ও থাকিবার ব্যবস্থা আছে; দরকার পড়িলে বস্ত্রাদি পর্যন্ত যোগানো হয়। অসুখে তাহাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। সকলের সম্বন্ধেই এমন যত্ন লওয়া হয় যেন প্রত্যেকেই পরিবারের একজন।
  1. বিহারীলাল সরকার লিখিত “বিদ্যাসাগর” পুস্তকের ৪৮৩-৮৪ পৃষ্ঠায় এই সংক্রান্ত পত্র দুইখানি মুদ্রিত হইয়াছে।