পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্ত্রীশিক্ষা-বিস্তারে বিদ্যাসাগর
৪৯

সদস্যরূপে রাজা কালীকৃষ্ণ দেব বাহাদুর, রায় হরচন্দ্র ঘোষ বাহাদুর, রমাপ্রসাদ রায় এবং কাশীপ্রসাদ ঘোষ প্রভৃতির নাম উল্লিখিত হয়। বিদ্যাসাগরকে সম্পাদক করিয়া তাঁহার উপর স্কুলের তত্ত্বাবধানের ভার দিবার জন্য বীডন ব্যগ্র হইলেন। তিনি ছোটলাটকে লিখিলেন:— “কমিটির সম্পাদক-নিয়োগে পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র শর্ম্মাকেই উপযুক্ত ব্যক্তি বলিয়া মনে করিতে পারেন। তাঁহার সামাজিক সম্মান ও স্কুলের সম্পাদক হিসাবে পূর্ব্ব পরিশ্রম তাঁহার যোগ্যতা প্রমাণ করে।”[১]

 বাংলা-সরকার সম্মত হইলৈন। বীডন সাহেব কমিটির সভাপতি, ও বিদ্যাসাগর সম্পাদক নির্ব্বাচিত হইলেন।[২]

 ড্রিঙ্কওয়াটার বীটনের মত বিদ্যাসাগরও স্ত্রীশিক্ষার অত্যন্ত পক্ষপাতী ছিলেন; তিনিও মনে করিতেন স্ত্রীশিক্ষা ভিন্ন দেশের উন্নতি নাই। কিন্তু তাঁহার উৎসাহ ও কর্ম্মিষ্ঠতা শুধু বীটন স্কুলের কাজের মধ্যেই আবদ্ধ ছিল না।

 ১৮৫৪ খৃষ্টাব্দের বিখ্যাতত্রে ও অন্যত্র বিলাতের কর্ত্তৃপক্ষেরা স্ত্রীশিক্ষা সম্পূর্ণভাবে সমর্থন করিবার অভিপ্রায় প্রকাশ করেন। ভারতবর্ষে স্ত্রীশক্ষার বিস্তার এক সমস্যা। সেই সমস্যা-সমাধানের উপায় বহুল পরিমাণে বালিকা-বিদ্যালয় স্থাপন। ১৮৫৭ খৃষ্টাব্দের গোড়ার দিকে বাংলা দেশে হ্যালিডে সাহেব সেই কাজে হাত দিলেন। তিনি বিদ্যাসাগরকে ডাকাইয়া, তাঁহার সহিত এ-সম্বন্ধে খোলাখুলিভাবে আলোচনা করিলেন। কাজ কেমন কঠিন সে কথা তাঁহাদের অজ্ঞাত ছিল না। সাধারণ বালিকা বিদ্যালয়ে নিজেদের মেয়ে পাঠাইতে সম্ভ্রান্ত

  1. Education Con. 4 Sept. 1856, No. 166.
  2. Bengal Government to Vidyasagar, dated 30 Augt. 1856.Education Cons. 4 Sept. 1856,'’ Nos. 168 & 170.