পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫২
বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ

পারেন না। তিনি দেখাইলেন, ১৮৫৬, ১লা অক্টোবর তারিখের পত্রে বিলাতের কর্ত্তৃপক্ষ আশা দিয়া বলিয়াছেন যে, বালিকা-বিদ্যালয়গুলির ছাত্রীদের নিকট হইতে মাহিনা লওয়া হইবে না। কিন্তু তৎসত্ত্বেও ছোটলাট মনে করেন, আরও কিছু করা দরকার। তাই তিনি প্রস্তাব করিলেন, যখনই বালিকা বিদ্যালয়ের জন্য নিখরচায় উপযুক্ত গৃহ এবং অন্তত কুড়িটি ছাত্রী ভর্তি হইবে এমন একটা আশা পাওয়া যাইবে, তখনই স্কুল-পরিচালনার সমস্ত খরচ সরকার সরবরাহ করিবেন।

 ১৮৫৮, ৭ই মে তারিখের পত্রে ভারত সরকার বালিকাবিদ্যালয় সম্পর্কে সরকারী সাহায্যের নিয়মাবলীর ব্যতিক্রম করিতে অস্বীকৃত হইলেন; বলিলেন, উপযুক্ত পরিমাণে স্বেচ্ছাদত্ত সাহায্য না পাওয়া এরূপ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত না হওয়াই ভাল।

 ভারত-সরকারের এইরূপ আদেশ বিদ্যাসাগরের কাজে একান্ত বাধা জন্মাইল। সরকারের অনুমোদন পাওয়া যাইবেই, এই মনে করিয়া বিদ্যাসাগর অনেকগুলি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করিয়াছিলেন। অবশ্য কথা ছিল, স্থানীয় অধিবাসীরাই উপযুক্ত বিদ্যালয়-গৃহ নির্ম্মান, করিয়া দিবে, আর সরকার অন্যসব খরচ যোগাইবেন। পণ্ডিত এখন বুঝিলেন, তাঁহার সমস্ত পরিশ্রম ব্যর্থ হইয়াছে, এত কষ্টের স্কুলগুলি অবিলম্বে উঠাইয়া দিতে হইবে। আর এক সমস্যা—শিক্ষকদের বেতন। প্রতিষ্ঠাবধি স্কুল হইতে তাঁহারা মাহিনা পান নাই। ১৮৫৮, ৩০এ জুন পর্যন্ত ধরিলে তাঁহাদের সকলের মোট পাওনা হয়— ৩৪৩৯৵৫।

 এই সম্পর্কে ডিরেক্টর অফ পাবলিক ইন্‌ষ্ট্রাক্‌শনকে লেখা ঈশ্বরচন্দ্রের ২৪এ জুন তারিখের পত্রখানি পড়িলে ব্যাপারটা পরিস্কাররূপে বুঝা যাইবে। পত্রখানির মর্ম্ম দেওয়া গেল:—