পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্ত্রীশিক্ষা-বিস্তারে বিদ্যাসাগর
৫৭
সমস্ত চিঠিপত্র বিবেচনার্থ সেক্রেটারী অফ ষ্টেটের নিকট প্রেরিত হইবে। হুগলী, বর্দ্ধমান ও ২৪-পরগণায় বালিকা-বিদ্যালয় স্থাপনার জন্য অনধিক এক হাজার টাকার সাহায্যের জন্যও ইহাতে অনুরোধ থাকিবে। সেই টাকার কিয়দংশ পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র-প্রতিষ্ঠিত স্কুলগুলির সাহায্যার্থ এবং কিয়দংশ সরকার-সমর্থিত কতকগুলি মডেল স্কুলের জন্য ব্যয় করা হইবে।”[১]

 কিন্তু বিলাতের কর্ত্তৃপক্ষ সিপাই-বিদ্রোহের জন্য আর্থিক অনটনবশতঃ বালিকা-বিদ্যালয়গুলিতে কোন স্থায়ী সাহায্য করিতে অস্বীকার করিলেন;—তবে আশা দিলেন, বিষয়টা ভবিষ্যতে বিবেচিত হইবে।

 ১৮৫৮, নভেম্বর মাসে বিদ্যাসাগর সরকারী চাকরি হইতে অবসর গ্রহণ করিয়াছিলেন। শোনা যায়, বালিকা-বিদ্যালয় সম্পর্কীয় ব্যাপারে ডিরেক্টর অফ পাবলিক ইন্‌ষ্ট্রাকশনের সহিত মতান্তরই না-কি তাঁহার পদত্যাগের অন্যতম কারণ। মাসিক ৫০০৲ টাকা আয় হ্রাস, সরকারের সাহায্যদানে অসম্মতি—এ-সব কিছুতেই তৎপ্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়গুলির ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে বিদ্যাসাগরকে নিরাশ করিতে পারিল না। বালিকা-বিদ্যালয়গুলির পরিচালনের জন্য তিনি এক নারীশিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ভাণ্ডার খুলিলেন। ইহাতে পাইকপাড়ার রাজা প্রতাপচন্দ্র সিংহ রায় প্রমুখ বহু সম্ভ্রান্ত দেশীয় ভদ্রলোক এবং উচ্চতন সরকারী কর্ম্মচারীরা নিয়মিত চাঁদা দিতেন। স্ত্রীশিক্ষার বিস্তারে তাঁহার প্রচেষ্টা যে দেশবাসীর আনুকুল্য লাভ করিয়াছে তাহা স্যর বার্টল ফ্রিয়ারকে লিখিত তাঁহার একখানি পত্রে প্রকাশ:—

“শুনিয়া সুখী হইবেন, মফঃস্বলের যে-সকল বালিকা বিদ্যালয়ের জন্য আপনি চাঁদা দিয়াছিলেন, সেগুলি ভালই চলিতেছে। কলিকাতার
  1. Education Con. Jany. 1859, No. 9.