জীবনচরিত—সর উইলিয়ম হর্শেল ›8ዓ এক যন্ত্রোপরি সন্নিবেশিত হইয়া ব্যবহারযোগ্য হইল। ঐ যন্ত্র অতিশয় জটিল বটে, কিন্তু প্রগাঢ়তর বুদ্ধিকৌশলে সম্পাদিত। উহা দ্বারা ঐ নলের সঞ্চালনাদি ক্রিয় নিয়মিত হইত। শনৈশ্চরের ষষ্ঠ পারিপাশ্বিক বলিয়া যাহাকে সকলে অনুমান করিত, সন্নিবেশদিবসেই সেই দূরবীক্ষণ দ্বারা উহা উদ্ভাবিত হইল। কিয়দিনানন্তর ঐ নল দ্বারা শনৈশ্চরের সপ্তম পারিপাশ্বিকও আবিষ্কৃত হইল। এক্ষণে ঐ নল স্বস্থান হইতে অপসারিত হইয়াছে এবং তৎপরিবর্তে হশেলের সুবিখ্যাত পুত্রের হস্তবিনির্মিত অত্যুৎকৃষ্ট অন্য এক দূরবীক্ষণ তথায় স্থাপিত হইয়াছে। উহা দৈর্ঘ্যে পূৰ্ব্ব যন্ত্রের অৰ্দ্ধেকের অধিক নহে। ইহা নির্দিষ্ট আছে, এই প্রধান জ্যোতিবিদ স্বাভিলষিত বিদ্যার আলোচনাবিষয়ে এমন অনুরক্ত ছিলেন যে, অনেক বৎসর পর্য্যন্ত নক্ষত্রদর্শনযোগ্য কালে তখন ও শয্যারূঢ় থাকিতেন না ; কি শীত, কি গ্রীষ্ম, সকল ঋতুতে নিজ উদ্যানে অনাবৃত প্রদেশে প্রায় একাকী অবস্থিত হইয়া সমুদয় পৰ্য্যবেক্ষণ সমাধান করেন । তিনি এই সমস্ত গবেষণা দ্বারা দূরতরবর্তী নক্ষত্রসমূহের ভাব অবগত হইয়া, তদ্বিষয়ের সবিশেয বিবরণ স্বাভিপ্রায়সহিত পত্রারূঢ় করিয়া প্রচার করেন । হশেল তৎকালজীবী প্রধান প্রধান জ্যোতিজ্ঞ বর্গের মধ্যে গণনীয় হইয়াছিলেন এবং পণ্ডিতসমাজে ও রাজসন্নিধানে যথেষ্ট মৰ্য্যাদা পাইয়াছিলেন । ১৮১৬ খৃঃ অব্দে, যুবরাজ চতুর্থ জর্জ তাহাকে নাইট উপাধি প্রদান করেন । হশেল, প্রথমে সেনাসম্পৰ্কীয় তুর্য্যসম্প্রদায়নিযুক্ত এক দরিদ্র বালকমাত্র ছিলেন ; কিন্তু বহুমঙ্গলহেতুভূত জ্যোতির্বিদ্যার শ্ৰীবৃদ্ধিবিষয়ে দীর্ঘ কাল পর্য্যস্ত গরীয়সী আয়াসপরম্পর। স্বীকার করাতে, পরিশেষে এই রূপে পুরস্কৃত হইলেন। হশেল, মৃত্যুর কতিপয় বৎসর পূর্ব পর্য্যন্ত জ্যোতির্ষিক পৰ্য্যবেক্ষণে ক্ষান্ত হয়েন নাই ; অনন্তর, ১৮২২ খৃঃ অব্দে, আগষ্ট মাসের ত্রয়োবিংশ দিবসে, ত্র্যশীতিবর্ষ বয়ঃক্রমকালে, লোকযাত্রা সংবরণ করিলেন । তিনি, যথেষ্ট বয়স ও যথেষ্ট মান প্রাপ্ত হইয়া, এবং পরিবারের নিমিত্ত অপ্রমিত সম্পত্তি রাখিয়া, তনুত্যাগ করিয়াছেন । ঐ পরিবার, তদীয় অপ্রমিত ধনসম্পত্তির ন্যায়, তদীয় অদ্ভুত ধীসম্পত্তিরও উত্তরাধিকারী হইয়াছেন।
