পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ).djvu/১৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

〉や8 বিদ্যাসাগর-গ্রন্থাবলী—শিক্ষা না । যেখানে আলোক থাকে, সেখানে চক্ষুতে দেখা যায় ; যেখানে গাঢ় অন্ধকার, কিছুই আলোক নাই, সেখানে কিছুই দেখা যায় না । রাত্রিকালে, চন্দ্র ও নক্ষত্র দ্বারা, অতি অল্প আলোক হয় ; এ নিমিত্ত, বড় স্পষ্ট দেখিতে পাওয়া যায় না। দিনের বেলায়, সূর্য্যের আলোক থাকে ; এজন্ত, অতি সুন্দর দেখিতে পাওয়া যায়। রাত্রিতে প্রদীপ জালিলে, বিলক্ষণ আলোক হয় ; তখন উত্তম দেখিতে পাওয়া যায়। চক্ষু অতি কোমল পদার্থ, অল্পেই নষ্ট হইতে পারে ; এজন্য, চক্ষুর উপর দুই খানি আবরণ আছে । ঐ আবরণকে চক্ষুর পাতা বলে । চক্ষুতে আঘাত লাগিবার, অথবা কিছু পড়িবার, আশঙ্কা হইলে, আমরা পাতা দিয়া চক্ষু ঢাকিয়া ফেলি । চক্ষুর পাতার ধারে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রোম আছে, তাহাতেও চক্ষুর অনেক রক্ষা হয়। ঐ রোমের নাম পক্ষ। পক্ষ্ম আছে বলিয়, চক্ষুতে ধূলা, কুটা, কীট প্রভৃতি পড়িতে পায় না, এবং সূর্য্যের উত্তাপ অধিক লাগে না । যাহার দুই চক্ষু নাই, সে অন্ধ । অন্ধ কিছুই দেখিতে পায় না। সে কোথাও যাইতে পারে না । যাইতে হইলে, এক জন তাহার হাত ধরিয়া লইয়া যায় ; নতুবা সে পড়িয়া মরে । অন্ধ হওয়া বড় ক্লেশ । যাহার এক চক্ষু নাই, তাহাকে কাণ বলে। কাণ৷ এক চক্ষু দ্বারা দেখিতে পায় । কাণাকে, অন্ধের মত, ক্লেশ পাইতে হয় না । অক্ষিগোলকের সম্মুখভাগে যে গোলাকৃতি অংশ কৃষ্ণবর্ণ দেখায়, ঐ অংশ কাচের হ্যায় স্বচ্ছ । উহার পশ্চাতে, পর পর, কাচের ন্যায় স্বচ্ছ আর তিনটি অংশ আছে । তৎপরে আর একটি অংশ আছে ; উহা কোমল পাতলা পদার্থ। স্নায়ু দ্বারা, মস্তিষ্কের সহিত, এই কোমল পাতলা পদার্থের যোগ আছে । আমরা যে বস্তু দেখি, সে বস্তু হইতে আলোক আসিয়া, ঐ সকল স্বচ্ছ অংশ ভেদ করিয়া, অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। তখন, ঐ কোমল পাতলা পদার্থের উপর সেই বস্তুর ক্ষুদ্র প্রতিকৃতি আবিভূত হয় ; এবং স্বায়ু দ্বারা, মস্তিষ্কের সহিত ঐ কোমল পাতলা পদার্থের যোগ আছে বলিয়া, দর্শনজান জন্মে । কর্ণ কর্ণ দ্বারা সকল শব্দের শ্রবণ হয় ; এ নিমিত্ত, কর্ণকে শ্রবণেন্দ্রিয় বলে। কৰ্ণ ন৷ থাকিলে, আমরা কিছুই শুনিতে পাইতাম না । শব্দ সকল প্রথমতঃ কর্ণকুহরে প্রবেশ করে। কর্ণকুহরে, পটহের মত, যে অতি পাতলা এক খণ্ড চৰ্ম্ম আছে, তাহাতে ঐ সকল শব্দের প্রতিঘাত হয়, এবং তাহাতেই শ্রবণজ্ঞান নিম্পন্ন হইয় থাকে। কোনও কোনও