পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ).djvu/২০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বোধোদয়—জল—নদী—সমুদ্র Sb-(? জল পুনরায় যে ক্রমে ক্রমে অল্প হইতে থাকে, তাহাকে ভাট বলে । সূৰ্য্য ও চন্দ্রের আকর্ষণে এই অদ্ভুত ঘটনা হয়। লোকে জাহাজে চড়িয়া, সমুদ্রের উপর দিয়া, এক দেশ হইতে অন্য দেশে যায়। যদি জাহাজ ঝড় ও তুফানে পড়ে, অথবা পাহাড়ে কিংবা চড়ায় লাগে, তাহ হইলে বড় বিপদ ; জাহাজের সমস্ত লোকের প্রাণ নষ্ট হইতে পারে । সমুদ্র এত বিস্তৃত যে, কতক দূর গেলে, আর তীর দেখা যায় না, অথচ জাহাজের লোক পথহারা হয় না । তাহার কারণ এই, জাহাজে কম্পাস নামে একটি যন্ত্র থাকে ; ঐ যন্ত্রে একটি সূচী আছে ; জাহাজ যে মুখে যাউক না কেন, সেই সূচী সৰ্ব্বদা উত্তর মুখে থাকে ; তাহ দেখিয়া, নাবিকের দিভূনির্ণয় করে । প্রাতঃকালে যে দিকে সূর্য্যের উদয় হয়, উহাকে পূৰ্ব্ব দিক বলে ; যে দিকে সূৰ্য্য অস্ত যায়, তাহাকে পশ্চিম দিক বলে । পুৰ্ব্ব দিকে ডানি হাত করিয়া দাড়াইলে, সম্মুখে উত্তর, ও পশ্চাতে দক্ষিণ, দিক হয় । এই পূৰ্ব্ব, পশ্চিম, উত্তর, দক্ষিণ লক্ষ্য করিয়া, লোকে, কি স্থলপথে, কি জলপথে, পুথিবীর সকল স্থানে যাতায়াত করে । নদীর ও অন্য অন্য স্রোতের জল সুস্বাদ, সমুদ্রের জলের ন্যায় বিস্বাদ ও লবণময় নহে । যাবতীয় নদীর উৎপত্তি স্থান প্রস্রবণ। গঙ্গা, সিন্ধু, ব্রহ্মপুত্র প্রভৃতি যত বড় বড় নদী আছে, সকলেরই এক এক প্রস্রবণ হইতে উৎপত্তি হইয়াছে। বর্ষাকালে সৰ্ব্বদ বৃষ্টি হয় ; এজন্য, ঐ সময়ে, সকল নদীর প্রবাহের বৃদ্ধি হইয় থাকে । সমস্ত প্রধান প্রধান নদীর জল সমুদ্রে পড়ে। কিন্তু তাহাতে সমুদ্রে জলের বৃদ্ধি হয় না । কারণ, নদীপাত দ্বারা সমুদ্রের যত জল বাড়ে, ঐ পরিমাণে সমুদ্রের জল, সৰ্ব্বদ, কুত্মটিক ও বাষ্প হইয়া আকাশে উঠে। ঐ সমস্ত বাম্পে মেঘ হয়। মেঘ সকল, যথাকলে, জল হইয়া ভূতলে পতিত হয় । সেই জল দ্বারা, পুনরায়, নদীর প্রবাহের বৃদ্ধি হয় । সমুদ্র ও নদীতে নানা প্রকার মৎস্য ও জলজন্তু আছে । 는 8