পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ).djvu/৩১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বর্ণপরিচয়—দ্বিতীয় ভাগ ২৯৭ তখন শিক্ষক কহিলেন, তোমার এই কথা শুনিয়া সন্তুষ্ট হইলাম। কিন্তু তুমি, যে পাখীকে লক্ষ্য করিয়া, ডেলা ছুড়িয়াছিলে, উহার গায়ে ঐ ডেলা লাগে নাই। নিকটে একটি বালক দাড়াইয়া ছিল, ডেলা তাহার মাথায় লাগিয়া রক্তপাত হইয়াছে । চক্ষুতে লাগিলে সে এ জন্মের মত, অন্ধ হইয়া যাইত। বালকটি কাতর হইয়া কত রোদন করিতেছে। অতএব দেখ, ডেলা ছোড়ায় কত দোষ । সুরেন্দ্র শুনিয়া অতিশয় দুঃখিত হইল, এবং আমি বড় তুষ্কৰ্ম্ম করিয়াছি, এই বলিয়া রোদন করিতে লাগিল। কিঞ্চিৎ পরে কহিল, মহাশয় । না বুঝিয়া, আমি এই দুষ্কৰ্ম্ম করিয়াছি। আপনকার সমক্ষে বলিতেছি, আর কখনও এমন কৰ্ম্ম করিব না । এবার আপনি আমায় ক্ষমা করুন । শিক্ষক শুনিয়া অতিশয় সন্তুষ্ট হইলেন, এবং কহিলেন, সুরেন্দ্র । তুমি যে দোষ করিয়া স্বীকার করিলে, এবং আর কখনও ওরূপ দোষ করিবে না বলিলে, ইহাতে আমি অতিশয় সন্তুষ্ট হইলাম। দেখিও, ডেলা ছোড়া ভাল নয়, এ কথা যেন ভুলিয়া না যাও ।

দশম পাঠ
চুরি করা কদাচ উচিত নয়
না বলিয়া পরের দ্রব্য লইলে চুরি করা হয়। চুরি করা বড় দোষ। যে চুরি করে, তাহাকে চোর বলে। চোরকে কেহ বিশ্বাস করে না। চুরি করিয়া ধরা পড়িলে, চোরের দুৰ্গতির সীমা থাকে না। বালকগণের উচিত, কখনও চুরি না করা। পিতা মাতা প্রভৃতির কৰ্ত্তব্য, পুত্র প্রভূতিকে কাহারও কোনও দ্রব্য চুরি করিতে দেখিলে, তাহাদের শাসন করেন এবং চুরি করিলে কি দোষ হয়, তাহাদিগকে ভাল করিয়া বুঝাইয়া দেন।
একদা, একটি বালক, বিদ্যালয় হইতে, অন্য এক বালকের এক খানি পুস্তক চুরি করিয়া আনিয়াছিল। অতি শৈশব কালে, ঐ বালকের পিতা মাতার মৃত্যু হয়। তাহার মাসী লালনপালন করিয়াছিলেন । তিনি, তাহার হস্তে ঐ পুস্তক খানি দেখিয়া, জিজ্ঞাসা করিলেন, ভুবন । তুমি এই পুস্তক কোথায় পাইলে । সে কহিল, বিদ্যালয়ের এক বালকের পুস্তক। তিনি বুঝিতে পারিলেন, ভুবন ঐ পুস্তক খানি চুরি করিয়া আনিয়াছে। কিন্তু