পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ).djvu/৩৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

v·)ybr বিদ্যাসাগর-গ্রন্থাবলী—শিক্ষা হইতেছে যে, আমরা এত দিন লাঙ্গুল রাখিয়াছি কেন । হে বন্ধুগণ ! আমি স্বয়ং, যার পর নাই, উপকার বোধ করিয়াছি ; এজন্য, তোমাদিগকে পরামর্শ দিতেছি, তোমরাও, আমার মত, আপন আপন লাঙ্গুল কাটিয়া ফেল। লাঙ্গুল না থাকায় কত আরাম, এখনই বুঝিতে পারিবে । এই প্রস্তাব শুনিয়া, এক বৃদ্ধ শৃগাল, অগ্রসর হইয়া, লাঙ্গুলহীন শৃগালকে কহিল, ভাই হে ! যদি তোমার লাঙ্গুল ফিরিয়া পাইবার সম্ভাবনা থাকিত, তাহা হইলে, তুমি, কদাচ, আমাদিগকে লাঙ্গুল কাটিয়া ফেলিতে পরামর্শ দিতে না । বৃদ্ধা নারী ও চিকিৎসক এক বৃদ্ধ নারীর চক্ষু নিতান্ত নিস্তেজ হইয়া গিয়াছিল ; এজন্য, তিনি কিছুই দেখিতে পাইতেন না। নিকটে এক প্রসিদ্ধ চিকিৎসক ছিলেন । বৃদ্ধ। তাহার নিকটে গিয়া কহিলেন, কবিরাজ মহাশয় । আমার চক্ষুর দেয জন্মিয়াছে, আমি কিছুই দেখিতে পাই না ; আপনি আমার চক্ষু ভাল করিয়া দেন ; আমি আপনাকে বিলক্ষণ পুরস্কার দিব ; কিন্তু, ভাল করিতে না পারিলে, আপনি কিছুই পাইবেন না । চিকিৎসক, বুদ্ধার প্রস্তাবে সম্মত হইয়া, পর দিন, প্রাতঃকালে, তাহার আলয়ে উপস্থিত হইলেন। বৃদ্ধার গৃহ নানাবিধ দ্রব্যে পরিপূর্ণ দেখিয়া, চিকিৎসকের অতিশয় লোভ জন্মিল । তিনি স্থির করিলেন, প্রতিদিন, ইহাকে দেখিতে আসিব, এবং এক একটি দ্রব্য লইয়া যাইব । এজন্য, যাহাতে শীঘ্র তাহার পড়ার শান্তি হইতে পারে, সেরূপ ঔষধ না দিয়া, কিছুদিন গোলমাল করিয়া কাটাইলেন । পরে, একে একে সমস্ত দ্রব্য লইয়া গিয়া, তিনি রীতিমত ঔষধ দিতে আরম্ভ করিলেন। বৃদ্ধার চক্ষু, অল্প দিনেই, পূর্ববৎ, নির্দোষ হইল। তিনি দেখিলেন, তাহার গৃহে যে নানাবিধ দ্রব্য ছিল, তাহার একটিও নাই ; অনুসন্ধান দ্বারা জানিতে পারিলেন, চিকিৎসক, একে একে, সমুদয় লইয়া গিয়াছেন । এক দিন, চিকিৎসক বৃদ্ধাকে কহিলেন, আমার চিকিৎসায় তোমার পীড়ার শান্তি হইয়াছে। পীড়ার শান্তি হইলে, আমায় পুরস্কার দিবে, বলিয়াছিলে ; এক্ষণে, প্রতিশ্রত পুরস্কার দিয়া, সন্তুষ্ট করিয়া, আমায় বিদায় কর । বৃদ্ধ, চিকিৎসকের আচরণে, অতিশয় অসন্তুষ্ট হইয়াছিলেন ; এজন্য, কোনও উত্তর দিলেন না। চিকিৎসক, বারংবার চাহিয়াও,