পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ).djvu/৩৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কথামালা VIVA ব্যবসায়ী ব্যক্তি, পুৰ্ব্ব পূৰ্ব্ব বারে, লবণ গলিয়া যাইবার ভয়ে, যত শীঘ্ৰ পারে, বলদকে উঠাইত ; এ বারে, অনেক বিলম্ব করিয়া উঠাইল। অনেক বিলম্ব হওয়াতে, তুল ভিজিয়া অতিশয় ভারী হইল। সে, সমুদয় ভিজা তুল বলদের পৃষ্ঠে চাপাইয়া, লইয়া চলিল। সুতরাং, সে দিবস, নালায় পড়িবার পূর্বে, বলদকে যত ভার বহিতে হইয়াছিল, নালায় পড়িয়া, তাহার দ্বিগুণ অপেক্ষা অধিক ভার বহিতে হইল । সকল সময়ে এক ফিকির খাটে না । হরিণ এক হরিণ খালে জলপান করিতে গিয়াছিল। জলপান করিবার সময়ে, জলে তাহার শরীরের প্রতিবিম্ব পড়িয়ছিল। সেই প্রতিবিম্বে দৃষ্টিপাত করিয়া, হরিণ কহিল, আমার শৃঙ্গ যেমন দৃঢ়, তেমনই সুন্দর ; কিন্তু, আমার পা দেখিতে অতি কদৰ্য্য ও অকৰ্ম্মণ্য । হরিণ, এই রূপে, আপন অবয়বের দোষ ও গুণের বিবেচনা করিতেছে, এমন সময়ে, ব্যাধের আসিয়া তাড়া করিল। সে, প্রাণভয়ে, এত বেগে পলায়িতে লাগিল যে, ব্যাধের অনেক পশ্চাতে পড়িল । কিন্তু, জঙ্গলে প্রবেশ করিব মাত্র, তাহার শৃঙ্গ লতায় এমন জড়াইয়া গেল যে, আর সে পলায়ন করিতে পারিল না। তখন ব্যাধের আসিয়া তাহার প্রাণবধ করিল। হরিণ, এই বলিয়া, প্রাণত্যাগ করিল যে, আমি, যে অবয়বকে কদৰ্য্য ও অকৰ্ম্মণ্য স্থির করিয়া, অসন্তুষ্ট হইয়াছিলাম, উহা অামায় শক্ৰহস্ত হইতে বাচাইয়াছিল ; কিন্তু, যে অবয়বকে দৃঢ় ও সুন্দর বোধ করিয়া, সন্তুষ্ট হইয়াছিলাম, তাহাই আমার প্রাণনাশের হেতু হইল। জ্যোতির্বেত্তা এক জ্যোতির্বেত্তা, প্রতিদিন, রাত্রিতে নক্ষত্রদর্শন করিতেন। এক দিন তিনি, আকাশে দৃষ্টিপাত করিয়া, নিবিষ্ট মনে নক্ষত্র দেখিতে দেখিতে, পথে চলিয়া যাইতেছিলেন ; সম্মুখে এক কূপ ছিল, দেখিতে না পাইয়া, তাহাতে পড়িয়া গেলেন। তিনি, কূপে পতিত হইয়া, নিতান্ত কাতর স্বরে, এই বলিয়া লোকদিগকে ডাকিতে লাগিলেন, ভাই রে! কে