পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ).djvu/৩৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কথামলা ৩৫১ শৃগাল অধিকতর ক্রুদ্ধ হইয়া বলিল, বাঃ ! তুই ক্ষুদ্র, অতি নীচ। এই বেড়া কত মহৎ । উহাকে অবলম্বন করিয়া আমি ত কষ্ট পাই নাই, সে ত আমায় যথেষ্ট সাহায্য করিয়াছে। কণ্টকবৃক্ষ বলিল, বেড়া মহৎ, সন্দেহ নাই, কেন না সে আমাকেও আশ্রয় দিয়াছে। কিন্তু তুমি আমা হইতেও নীচ, কেন না তুমি আমাকে অবলম্বন ও আশ্রয় মনে করিয়া জড়াইয়া ধরিয়াছ । আমি স্বয়ং যখন অন্যকে জড়াইয়া থাকি, তখন আমাকে জড়াইয়া তুমি কি তোমার বুদ্ধিহীনতার পরিচয় দেও নাই ? যে অন্যের উপর নির্ভর করে, সে অপরকে সাহায্য করিতে পারে না । পিপীলিকা ও তৃণকীট এক পিপীলিকা, শরৎকালে শস্যের সঞ্চয় করিয়া রাখিয়াছিল। শীতকালে, একদিন সে কিছু শস্য রৌদ্রে শুষ্ক করিবার নিমিত্ত, বাহির করিতে লাগিল। এক তৃণকীট ক্ষুধায় মৃতপ্রায় হইয়াছিল। সে, পিপীলিকাকে বলিল, দেখ ভাই ! আহার না পাইয়া, আমার প্রাণবিয়োগের উপক্রম হইয়াছে। যদি তুমি, দয়া করিয়া, তোমার সঞ্চিত শস্যের কিয়ৎ অংশ আমাকে দাও, তাহা হইলে আমার প্রাণরক্ষা হয়। পিপীলিকা জিজ্ঞাসা করিল, তুমি সমস্ত শরৎকাল কি করিয়াছিলে ? সে বলিল, আমি আলস্তে কাল হরণ করি নাই ; সমস্ত শরৎকাল অবিশ্রামে গান করিয়াছিলাম। এই কথা শুনিয়া, পিপীলিকা ঈষৎ হাসিয়া বলিল, যখন তুমি সমস্ত শরৎকাল গান করিয়া কাটাইয়াছ, সমস্ত শীতকাল নৃত্য করিয়া কাটাও । گے শরৎকালেব সঞ্চয়, শীতকালের সংস্থান হয়। পায়রা ও চীল এক চীলের সহিত, কতকগুলি পায়রার অতিশয় বিরোধ ছিল। চীল, পায়রাদের অতি প্রবল শত্রু । তাহার ভয়ে উহার। সৰ্ব্বক্ষণ শঙ্কিত থাকিত। উহালা নিজ নিজ