পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ).djvu/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৬ বিদ্যাসাগর-গ্রন্থাবলী—শিক্ষা যে রাজস্ব দিতে হইত, তাহ তাহাকে জায়গীর স্বরূপ দান করিলেন। নির্দিষ্ট আছে, ঐ রাজস্ব বার্ষিক তিন লক্ষ টাকার নূ্যন ছিল না। এই সকল ঘটনার কিছু দিন পরে, মীর জাফর, কলিকাতায় আসিয়া, ক্লাইবের সহিত সাক্ষাৎ করিলেন ; এবং তিনিও, যৎপরোনাস্তি সমাদর পূর্বক, তাহার সংবৰ্দ্ধনা করিলেন। তিনি তথায় থাকিতে থাকিতে, ওলন্দাজদিগের সাত খান যুদ্ধজাহাজ নদীমুখে আসিয়া নঙ্গর করিল। ঐ সাত জাহাজে পঞ্চদশ শত সৈন্ত ছিল। অতি ত্বরায় ব্যক্ত হইল, ঐ সকল জাহাজ নবাবের সম্মতি ব্যতিরেকে আইসে নাই। ইঙ্গরেজদিগকে দমনে রাখিতে পারে, এরূপ এক দল যুরোপীয় সৈন্য আনাইবার নিমিত্ত, তিনি, কিছু দিন অবধি, চুচুড়াবাসী ওলন্দাজদিগের সহিত মন্ত্রণা করিতেছিলেন । খোজাবাজীদ নামক কাশ্মীরদেশীয় বণিক এই সকল কুমন্ত্রণার সাধক হইয়াছিলেন। খোজাবাজীদ আলিবর্দি খার সবিশেষ অনুগ্রহপত্র ছিলেন । লবণব্যবসায় তাহার একচাটিয়া ছিল । তিনি এমন ঐশ্বৰ্য্যশালী ছিলেন যে, সহস্র মুদ্রার মৃনে তদীয় দৈনন্দিন ব্যয়ের নির্বাহ হইত না । একদা তিনি নবাবকে পঞ্চদশ লক্ষ টাকা উপহার দিয়াছিলেন। পূর্বে তিনি মুরশিদাবাদে ফরাসিদিগের এজেণ্ট ছিলেন ; পরে, চন্দন নগরের পরাজয় দ্বারা তাহদের অধিকার উচ্ছিন্ন হইলে, ইঙ্গরেজদিগের পক্ষে আইসেন। সিরাজ উদ্দৌলা তাহাকে সম্পূর্ণ বিশ্বাস করিতেন। কিন্তু, উক্ত নবাবকে রাজ্যভ্রষ্ট করিবার নিমিত্ত ইঙ্গরেজদিগকে আহবান করিবার বিষয়ে, তিনিই প্রধান উদ্যোগী হইয়াছিলেন । রাজবিপ্লবের পর, তিনি দেখিলেন যে ইঙ্গরেজদিগের নিকট যে সকল আশা করিয়াছিলেন, তাহ পূর্ণ হইল না ; এজন্য, তাহাদের দমন করিবার নিমিত্ত, বহুসংখ্যক ওলন্দাজী সৈন্ত্যের আনয়ন বিষয়ে যত্নবান হইয়াছিলেন । তৎকালে চুচুড়ার কোন্সিলে দুই পক্ষ ছিল । গবর্ণর বিসদম সাহেব এক পক্ষের প্রধান। ইনি ক্লাইবের বন্ধু ছিলেন । র্তাহার নিতান্ত বাসনা, কোনও রূপে সন্ধিভঙ্গ না হয়। বণে ট নামক এক ব্যক্তি অপর পক্ষের প্রধান । এই পক্ষের লোকের অতিশয় উদ্ধত ছিলেন। তাহাদের মত অনুসারে, চুচুড়ার সমুদয় কাৰ্য্য সম্পন্ন হইত। ইতঃপূৰ্ব্বে, ইঙ্গরেজের, আপনাদের মঙ্গলের নিমিত্ত, ওলন্দাজদিগকে নিষেধ করিয়াছিলেন যে, আপনার এই নদীতে স্বজাতীয় নাবিক রাখিতে পারিবেন না। ওলন্দাজের, বহুসংখ্যক সৈন্য পাঠাইয়া দিবার নিমিত্ত, বটেবিয়াতে পত্র লিখিয়াছিলেন। তাহারা মনে মনে