পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ).djvu/৫২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(? o R বিদ্যাসাগর-গ্রন্থাবলী—শিক্ষা দত্ত পাঁচশত টাকা বহিস্কৃত করিলেন, এবং বলিলেন, ও ব্যক্তি যে ঐ বাটীর যথার্থ আধিকারী, এই পাঁচশত টাকা তাহ সম্পূর্ণরূপে সপ্রমাণ করিয়া দিতেছে। এ বিষয়ে আমার আর অণুমাত্র সন্দেহ নাই। ইহা বলিয়া, তিনি যথোচিত ভৎসনা ও ঘূণাপ্রদর্শন পূর্বক টাকার তোড়াটি প্রতিবাদীর গায়ে ফেলিয়া দিলেন ; এবং বাদী, বাটীর যথার্থ অধিকারী বলিয়া মোকদমার নিম্পত্তি করিলেন । যেমন কৰ্ম্ম তেমনই ফল ডেন্মার্কের রাজধানী কোপনৃহেগন নগরে ক্রিষ্টিয়ন্‌ টুল নামে এক ব্যক্তি ছিলেন। ক্রিষ্টেফর রোজন ক্রেনজ নামে আর এক ব্যক্তি ঐ নগরে বাস করিতেন । ক্রিষ্টিয়ন টুলের মৃত্যু হইলে, তিনি তাহার সহধৰ্ম্মিণীকে বলিলেন, কিছুদিন পূর্বে তোমরা স্ত্রীপুরুষে আমার নিকট যে দশ হাজার টাকা ঋণ করিয়াছ, তাহার পরিশোধ কর । ঐ স্ত্রীলোক বলিলেন, আমরা কখনও আপনার নিকট টাকা ধার করি নাই ; আপনি ওরূপ কথা বলিতেছেন কেন ? তখন তিনি ঐ স্ত্রীলোকের ও তদীয় স্বামীর স্বাক্ষরিত খত দেখাইলেন । খত দেখিয়া ঐ স্ত্রীলোক বলিলেন, এ খত জলি ; আমি কখনও এ খতে নাম স্বাক্ষরিত করি নাই । রোজন ক্রেনজ, টাকা আদায়ের জন্য ঐ স্ত্রীলোকের নামে নালিশ করিলেন । বিচারপতি, ঐ স্ত্রীলোকের প্রতি ঋণপরিশোধের আদেশপ্রদান করিলেন। স্ত্রীলোক, নিতান্ত নিরুপায় হইয়া, অবশেষে ডেন্মার্কের অধীশ্বর চতুর্থ ক্রিষ্টিয়নের নিকট আবেদন করিলেন, মহারাজ, আমরা কখনও অমুকের নিকট টাকা ধার করি নাই ; তিনি জাল খত প্রস্তুত করিয়া, আদালতে আমার নামে নালিশ করেন । ঐ খত দেখিয়া, বিচারপতি আমার প্রতি ঋণপরিশোধের আদেশ দিয়াছেন । আমি মহারাজের নিকট ধৰ্ম্মপ্রমাণ বলিতেছি, আমরা উহার নিকট কম্মিন কালেও টাকা ধার করি নাই। মহারাজ, দয়া করিয়া এই বিষয়ের বিচার না করিলে, আমি এ জন্মের মত উচ্ছিন্ন হই । আবেদনপত্র পড়িয়া রাজা অঙ্গীকার করিলেন, আমি এ বিষয়ের যথোচিত বিচার করিব। অনন্তর তিনি রোজন ক্রেনজকে আপন নিকটে আনাইলেন। এ বিষয় তাহার সহিত কিয়ৎক্ষণ কথোপকথন করিয়া, রাজা বুঝিতে পারিলেন, এ দেন৷ বাস্তবিক নহে। তখন তিনি র্তাহাকে ক্ষান্ত হইবার নিমিত্ত অনেক বুঝাইলেন, অনেক অনুরোধ করিলেন ;