পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ).djvu/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

రిన বিদ্যাসাগর-গ্রন্থাবলী—শিক্ষা বান্সিটার্ট সাহেব, নবাবের অনিচ্ছা দেখিয়া, দোলায়মানচিত্ত হইলেন। মীর কাসিম এই বলিয়া ভয় দেখাইলেন, আমি সম্রাটের পক্ষে যাইব । তিনি স্পষ্ট বুঝিয়াছিলেন, এত কাণ্ড করিয়া, কখনই মুরশিদাবাদে নিরাপদে থাকিতে পারিবেন না। তখন, বান্সিটার্ট সাহেব, দৃঢ়তা সহকারে কার্য্য করা আবশ্যক বিবেচনা করিয়া, ইংলণ্ডীয় সৈন্যদিগকে রাজভবন অধিকার করিতে আদেশ দিলেন । তদর্শনে শঙ্কিত হইয়া, মীর জাফর অগত্য সম্মত হইলেন । অনন্তর, মুরশিদাবাদ ও কলিকাতা, এ উভয়ের অন্ততর স্থানে, বৃদ্ধ নবাবকে এক বাসস্থান দিবার প্রস্তাব হইল। নবাব বিবেচনা করিলেন, যদি আমি মুরশিদাবাদে থাকি, তাহা হইলে, যেখানে এত কাল আধিপত্য করিলাম, তথায় সাক্ষিগোপাল হইয়া থাকিতে হইবেক, এবং জামাতৃকুত পরিভব সহ করিতে হইবেক । অতএব, আমার কলিকাতায় যাওয়াই শ্রেয়ঃকল্প । তিনি, এক সামান্ত নৰ্ত্তকীকে আপন প্রণয়িনী করিয়াছিলেন, এবং তাহারই আজ্ঞাকারী ছিলেন। ঐ কামিনী উত্তর কালে মণিবেগম নামে সবিশেষ প্রসিদ্ধ হন। মুসলমান পুরাবৃত্তলেখক কহেন, ঐ রমণী ও মীর জাফর, প্রস্থানের পূৰ্ব্বে, অন্তঃপুরে প্রবেশ পূর্বক, পূৰ্ব্ব পূৰ্ব্ব নবাবদিগের সঞ্চিত মহামূল্য রত্ন সকল হস্তগত করিয়া, কলিকাতা প্রস্থান করিলেন । চতুর্থ অধ্যায় ১৭৬০ খৃঃ অব্দের ৪ঠা অক্টোবর, ইঙ্গরেজেরা মীর কাসিমকে বাঙ্গাল ও বিহারের সুবাদার করিলেন। তিনি, কৃতজ্ঞতা স্বরূপ, কোম্পানি বাহাদুরকে বৰ্দ্ধমান প্রদেশের অধিকার প্রদান করিলেন, এবং কলিকাতার কোন্সিলের মেস্বরদিগকে বিংশতি লক্ষ টাকা উপঢৌকন দিলেন। সেই টাকা তাহারা সকলে যথাযোগ্য অংশ করিয়া লইলেন । মীর কাসিম অতিশয় বুদ্ধিশালী ও ক্ষমতাপন্ন ছিলেন। তিনি সিংহাসনে অধিরূঢ় হইয়া, ইঙ্গরেজদিগকে এবং মীর জাফরের ও নিজের সৈন্য ও কৰ্ম্মচারীদিগকে যত টাকা দিতে হইবেক, প্রথমতঃ তাহার হিসাব প্রস্তুত করিলেন, তৎপরে সেই সকল পরিশোধ করিবার উপায় দেখিতে লাগিলেন। তিনি, সকল বিষয়ে ব্যয়ের সঙ্কোচ করিয়া আনিলেন ; অভিনিবেশ পূর্বক সমুদয় হিসাব দেখিতে লাগিলেন ; এবং, মীর জাফরের শিথিল শাসনকালে, রাজপুরুষের সুযোগ পাইয়া যত টাকা অপহরণ করিয়াছিলেন,