পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ).djvu/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○8 বিদ্যাসাগর-গ্রন্থাবলী—শিক্ষা সম্রাট শাহ আলম, তৎকাল পর্য্যন্ত, বিহারের পর্য্যন্তদেশে ভ্রমণ করিতেছিলেন । অতএব, ১৭৬০ খৃঃ অব্দের বর্ষা শেষ হইবা মাত্র, মেজর কার্ণক, সৈন্য সহিত যাত্রা করিয়া, তাহাকে সম্পূর্ণ রূপে পরাজিত করিলেন । যুদ্ধের পর, কাৰ্ণাক সাহেব, সন্ধি প্রস্তাব করিয়া, রাজা সিতাব রায়কে তাহার নিকট পাঠাইলেন । সম্রাট তাহাতে সম্মত হইলে, ইংলণ্ডীয় সেনাপতি, তদীয় শিবিরে গমন পূর্বক, র্তাহার সমুচিত সম্মান করিলেন । মীর কাসিম, সম্রাটের সহিত ইংরেজদিগের সন্ধিবাৰ্ত্ত শ্রবণে, অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হইলেন, এবং আপনার পক্ষে কোনও অপকার না ঘটে, এই নিমিত্ত সত্বর পাটনা গমন করিলেন । মেজর কাণাক মীর কাসিমকে, সম্রাটের সহিত সাক্ষাৎ করিবার নিমিত্ত, সবিশেষ অনুরোধ করিতে লাগিলেন । কিন্তু তিনি, কোনও ক্রমে, সম্রাটের শিবিরে গিয়া সাক্ষাৎ করিতে সম্মত হইলেন না । পরিশেষে, এই নিৰ্দ্ধারিত হইল, উভয়েই, ইঙ্গরেজদিগের কুঠিতে আসিয়া, পরস্পর সাক্ষাৎ করিবেন। উপস্থিত কার্য্যের নির্বাহের নিমিত্ত, এক সিংহাসন প্রস্তুত হইল। সমস্ত ভারতবর্ষের সম্রাট তদুপরি উপবেশন করিলেন। মীর কাসিম, সমুচিত সম্মান প্রদর্শন পূর্বক, তাহার সম্মুখবর্তী হইলেন ; সম্রাট তাহাকে বাঙ্গাল, বিহার, ও উড়িষ্যার সুবাদারী প্রদান করিলে, তিনি প্রতি বৎসর চতুৰ্বিংশতি লক্ষ টাকা করদান স্বীকার করিলেন। তৎপরে, সম্রাট দিল্লী যাত্রা করিলেন । কাণাক সাহেব, কৰ্ম্মনাশার তীর পর্য্যন্ত, তাহার অনুগমন করিলেন । সম্রাট, কাণাকের নিকট বিদায় লইবার সময়, প্রস্তাব করিলেন, ইঙ্গরেজেরা যখন প্রার্থনা করিবেন, তখনই আমি তাহাদিগকে বাঙ্গালা, বিহার, উড়িষ্যা, এই তিন প্রদেশের দেওয়ানী প্রদান করিব। ১৭৫৫ খৃঃ অব্দে, উড়িষ্যার অধিকাংশ মহারাষ্ট্রীয়দিগকে প্রদত্ত হয়, সুবর্ণরেখার উত্তরবর্তী অংশ মাত্র অবশিষ্ট থাকে। তদবধি ঐ অংশই উড়িষ্যা নামে উল্লিখিত হইত। মীর কাসিম, পাটনার গবর্ণর রামনারায়ণ ব্যতিরিক্ত, সমুদয় জমীদারদিগকে সম্পূর্ণ রূপে আপন বশে অনিয়াছিলেন। রামনারায়ণের ধনবান বলিয়া খ্যাতি ছিল ; কিন্তু তিনি ইঙ্গরেজদিগের আশ্রয়চ্ছায়াতে সন্নিবিষ্ট ছিলেন । এজন্য, সহসা তাহাকে আক্রমণ করা অবিধেয় বিবেচনা করিয়া, নবাব কৌশলক্রমে তাহার সৰ্ব্বনাশের উপায় দেখিতে লাগিলেন। রামনারায়ণ তিন বৎসর হিসাব পরিষ্কার করেন নাই । নবাব ইঙ্গরেজদিগকে লিখিলেন, রামনারায়ণের নিকট বাকীর আদায় না হইলে, আমি আপনাদের প্রাপ্যের