পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ).djvu/৬২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ংস্কৃতভাষা ও সংস্কৃতসাহিত্যশাস্ত্র সংস্কৃতভাষা সংস্কৃত অতি প্রাচীন ও অতি উৎকৃষ্ট ভাষা। এই অপূৰ্ব্ব ভাষায় ভূরি ভুরি শব্দ, ভূরি ভুরি ধাতু, ভূরি ভূরি বিভক্তি ও ভূরি ভূরি প্রত্যয় আছে, এবং এক এক শব্দে ও এক এক ধাতুতে নানা প্রত্যয় ও নানা বিভক্তির যোগ করিয়া, ভূরি ভূরি নূতন শব্দ ও ভূরি ভূরি পদ সিদ্ধ করা যাইতে পারে। এরূপ অভিপ্রায়ই নাই যে এই ভাষাতে অতি সুন্দর রূপে ব্যক্ত করিতে পারা যায় না ; এবং এরূপ বিষয়ই নাই যে এই ভাষাতে সুচারু রূপে সঙ্কলিত হইতে পারে না। অতি প্রাচীন কাল অবধি, অতি প্রধান প্রধান পণ্ডিতেরা, নানা বিষয়ে নানা গ্রন্থ রচনা করিয়া, এই ভাষাকে সম্যক মার্জিত ও অলস্কৃত করিয়া গিয়াছেন। সংস্কৃতভাষায় দুই পদ পরস্পর সন্নিহিত হইলে পূৰ্ব্ব, পর অথবা উভয় বর্ণ ই প্রায় রূপান্তর প্রাপ্ত হয়। যে প্রক্রিয়া দ্বারা এই রূপান্তরপ্রাপ্তি সিদ্ধ হয়, তাহাকে সন্ধি বলে সন্ধিপ্রক্রিয়া দ্বারা ভাষার অশ্রাব্যতাপরীহার ও মুশ্রাব্যতাসম্পাদন হইয়া থাকে। আর প্রক্রিয়াবিশেষ দ্বারা অনেক পদকে, একত্র যোগ করিয়া, এক পদ করা যায়। এই অনেক পদের একপদীকরণপ্রণালীকে সমাস বলে । সমাসপ্রক্রিয়া দ্বারা সংক্ষিপ্ততা ও সুশ্রাব্যতা সম্পন্ন হইয়া থাকে। কিন্তু ইহা অবশ্ব স্বীকার করিতে হইবেক যে সমাসঘটিত বাক্য সকল অপেক্ষাকৃত দুরূহ, এবং আবৃত্তিমাত্র তত্তদ্বাক্যের অর্থবোধ নির্বাহ হইয়া উঠে না। সমাসপ্রণালী অবলম্বন করিয়া ইচ্ছানুরূপ দীর্ঘ পদ প্রস্তুত করা যাইতে পারে। প্রাচীন গ্রন্থকৰ্ত্তারা তাদৃশ সমাসপ্রিয় ছিলেন না। কিন্তু নব্যেরা সচরাচর অতি দীর্ঘ দীর্ঘ সমাস করিয়া থাকেন। কোন কোন উৎকৃষ্ট কাব্যগ্রন্থেও বিংশতি পদ পৰ্য্যন্তও একপদীকৃত দেখিতে পাওয়া যায়। যাহা হউক, সংস্কৃতবৈয়াকরণের সন্ধি, সমাস, পদসাধন ও প্রভৃতিপ্রত্যয়যোগে নূতন নূতন শব্দ সঙ্কলন করিবার যে সমস্ত অভিনব পথ প্রস্তুত করিয়া গিয়াছেন, তদ্বারা সংস্কৃত এক অদ্ভুত ভাষা হইয়া উঠিয়াছে। সংস্কৃতভাযায় কি সরল, কি বক্র, কি মধুর,