পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ).djvu/৬৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬২৪ বিদ্যাসাগর-গ্রন্থাবলী—বিবিধ নলোদয় নলোদয়ের প্রত্যেক শ্লোক যমকালঙ্কারযুক্ত। এই কাব্য কালিদাসপ্রণীত । ইহাতে নলরাজার বৃত্তান্ত সজেক্ষপে বর্ণিত হইয়াছে। কালিদাস, যমকের দিকেই সম্পূর্ণ দৃষ্টি রাখাতে, স্বপ্রণীত অন্যান্ত কাব্যের স্যায়, নলোদয়কে স্বীয় অলৌকিক কবিত্বশক্তির লক্ষণে লক্ষিত করিবার অবকাশ পান নাই । এরূপ কিংবদন্তী অাছে, কালিদাস ঘটকপরের গৰ্ব্ব খৰ্ব্ব করিবার নিমিত্ত নলোদয় রচনা করেন ৷ ঘটকপরও, কালিদাসের ন্যায়, বিক্রমাদিত্যের নবরত্বের অন্তৰ্ব্বত্তী। ইনি যমকালঙ্কারযুক্ত দ্বাবিংশতি শ্লোক রচনা করেন । এই দ্বাবিংশতিশ্লোকাত্মক কাব্যও ঘটকপর নামে প্রসিদ্ধ। ঘটকপরের বিশেষ প্রশংসা করা যায় এমন কোন গুণ নাই । গ্রন্থকৰ্ত্তা শেষ শ্লোকে কহিয়াছেন, “যে কবি যমক লিখিয়া আমাকে পরাজয় করিতে পারিবেক, আমি ঘটকপর অর্থাৎ কলসীর খাপরা দ্বারা তাহার বারিবহন করিব।” (৯) কবির এই প্রতিজ্ঞাবাক্য দর্শনে এক প্রকার স্পষ্ট বোধ হইতেছে, ঘটকপরঘটিত প্রতিজ্ঞাদ্বারাই তাহার ও র্তাহার কাব্যের নাম ঘটকপর হইয়াছে । এরূপ কিংবদন্তী আছে, ঘটকপরের এই গৰ্বিবত প্রতিজ্ঞা দর্শনে রোষপরবশ হইয়া কালিদাস নলোদয় রচনা করেন ৷ ঘটকপর অপেক্ষ নলোদয়ে যমকের আড়ম্বর অনেক অধিক। যদি ঐ কিংবদন্তী সমূলক হয়, তাহ। হইলে, কালিদাস ঘটকপরের যমকরচনাগৰ্ব্ব বিলক্ষণ খৰ্ব্ব করিয়াছিলেন । মৃৰ্য্যশতক সূৰ্য্যশতক ময়ূরভট্টগ্রণীত । ময়ূরভট্ট এক শত শ্লোকে সূর্য্যের ও তদীয় মণ্ডল, কিরণ, অশ্ব ও সারথির বর্ণনা ও স্তব করিয়াছেন। এরূপ কিংবদন্তী আছে, ময়ূরভট্ট এই শতশ্লোকাত্মক সূৰ্য্যস্তব রচনা করিয়া কুষ্ঠ ব্যাধি হইতে মুক্ত হইয়াছিলেন। সূৰ্য্যশতকের রচনা অতিপ্রগাঢ় ও অতিসুন্দর ; ইহাতে অসাধারণ কবিত্বশক্তিও প্রদর্শিত হইয়াছে। কিন্তু ময়ূরভট্টের যেরূপ রচনাশক্তি ও যেরূপ কবিত্বশক্তি ছিল, তাহ বিষয়াস্তরে প্রয়োজিত হইলে, তিনি সূৰ্য্যশতক অপেক্ষা অনেক অংশে উৎকৃষ্ট কাব্য রচনা করিয়া যাইতে পারিতেন । (৯) জীয়েয় যেন কবিনা যমকৈঃ পরেণ তস্মৈ বহেয়মুদকং ঘটকপরেণ।