পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ).djvu/৭০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নিস্কৃতিলাভপ্রয়াস \וי לט লিখিয়াছেন, “বিদ্যাসাগরপ্রণীত বেতালপঞ্চবিংশতিতে অনেক নূতন ভাব ও অনেক স্বমধুর বাক্য তর্কালঙ্কার দ্বারা অস্তনিবেশিত হইয়াছে। ইহা তর্কালঙ্কার দ্বারা এত দূর সংশোধিত ও পরিমার্জিত হইয়াছিল যে, বোমাণ্ট ও ফ্লেচরের লিখিত গ্রন্থ গুলির ন্যায় ইহা উভয় বন্ধুর রচিত বলিলেও বলা যাইতে পারে।” এই কথা নিতান্ত অলীক ও অসঙ্গত ; আমার বিবেচনায়, এরূপ অলীক ও অসঙ্গত কথা লিখিয়া প্রচার করা যোগেন্দ্ৰ নাথ বাবুর নিতান্ত অন্যায় কাৰ্য্য হইয়াছে। এতদ্বিযয়ের প্রকৃত বৃত্তান্ত এই—আপনি, বেতালপঞ্চবিংশতি রচনা করিয়া, আমাকে ও মদনমোহন তর্কালঙ্কারকে শুনাইয়াছিলেন । শ্রবণকালে আমর মধ্যে মধ্যে স্ব স্ব অভিপ্রায় ব্যক্ত করিতাম । তদনুসারে স্থানে স্থানে দুই একটি শব্দ পরিবর্তিত হইত। বেতালপঞ্চবিংশতি বিষয়ে, আমার অথবা তর্কালঙ্কারের, এতদতিরিক্ত কোন সংস্রব বা সাহায্য ছিল না । আমার এই পত্র খানি মুদ্রিত করা যদি আবশ্বক বোধ হয়, করিবেন, তদ্বিষয়ে আমার সম্পূর্ণ সম্মতি ইতি । কলিকত।। সোদ বাভিমানিন: ১২ই বৈশাখ, ১২৮৩ সাল । শ্রগিরিশচন্দ্রশৰ্ম্মণ:” যোগেন্দ্রনাথ বাবু স্বীয় শ্বশুরের জীবনচরিত পুস্তকে, আমার সংক্রান্ত যে সকল কথা লিখিয়াছেন, তাহার অধিকাংশই এইরূপ অমূলক। দৃষ্টান্ত স্বরূপ আর একটি স্থল প্রদশিত হইতেছে। তিনি ১৮ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন,— “সংস্কৃত কলেজের অধক্ষের পদ শূন্ত হইল। এরূপ শুনিতে পাই, বেথুন তর্কালঙ্কারকে এই পদ গ্রহণে অমুবোধ করেন। তিনি বিদ্যাসাগরকে ঐ পদের যোগ্য বলিয়া বেথুনের নিকট আবেদন কবায়, বেথুন সাহেব বিদ্যাসাগর মহাশয়কেই ঐ পদে নিযুক্ত করিতে বাধ্য হইলেন । এই জনশ্রুতি যদি সত্য হয়, তাহা হইলে ইহা অবশ্যই স্বীকার করিতে হইবে যে তর্কালঙ্কাবের ন্যায় সদাশয় উদারচরিত ও বন্ধুহিতৈষী ব্যক্তি অতি কম ছিলেন । হৃদয়ের বন্ধুকে আপন অপেক্ষ উচ্চতর পদে অভিষিক্ত করিয়া তর্কালঙ্কার বন্ধুত্বের ও ঔদায্যের পরা কাষ্ঠ দেখাইয়া গিয়াছেন।” গ্রন্থকৰ্ত্তার অলৌকিক কল্পনাশক্তি ব্যতীত এ গল্পটির কিছুমাত্র মূল নাই। মদনমোহন তর্কালঙ্কার, ইঙ্গরেজী ১৮৪৬ সালে, সংস্কৃত কলেজে সাহিত্যশাস্ত্রের অধ্যাপকপদে নিযুক্ত হয়েন ; ইঙ্গরেজী ১৮৫০ সালের নবেম্বর মাসে, মুরশিদাবাদের জজ পণ্ডিত নিযুক্ত হইয়া, সংস্কৃত কালেজ হইতে প্রস্থান করেন। তর্কালঙ্কারের নিয়োগ সময়েও, যিনি ( বাবু রসময় দত্ত ) সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন, তর্কালঙ্কারের প্রস্থােন সময়েও, তিনিই ( বাবু রসময় দত্ত) সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন । ফলতঃ, তর্কালঙ্কার যত দিন