পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ).djvu/৭৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিজ্ঞাপন পশ্চিম অঞ্চলে, জন মিয়র নামে এক সিবিলিয়ান ছিলেন । তিনি ভারতবর্ষীয় নানা বিষয়ে, বিশেষতঃ সংস্কৃত ভাষায়, বিলক্ষণ নিপুণ হইয়াছিলেন। ১৮৩৮ সালে কলেজের সেক্রেটারি ছাত্রবর্গকে সমবেত করিয়া বলিলেন, মিয়র সাহেব লিখিয়াছেন, পরমেশ্বরের মহিমাবিষয়ে যে ছাত্রের রচিত শতশ্লোক সৰ্ব্বোৎকৃষ্ট হইবেক, তিনি তাহাকে একশত টাকা পুরস্কার দিবেন। এই কথা শুনিয়া, সমবেত হইয়া, ছাত্রবর্গ এবিষয়ে অনেক আন্দোলন করিলেন । অবশেষে, এই সিদ্ধান্ত হইল, টাকা দেওয়া সন্দেহ স্থল, অতএব এ বিষয়ে পরিশ্রম করিবার প্রয়োজন নাই । কেবল, দিগম্বর চট্টোপাধ্যায় নামক একটি ছাত্র বলিলেন, টাকা পাই, আর না পাই, আমি প্রস্তাবিত শ্লোকরচনা করিব । তিনি, একশত শ্লোকের রচনা করিয়া, একশত টাকা পুরস্কার পাইলেন । তদর্শনে, অনেকে বিলক্ষণ অনুতাপগ্ৰস্ত হইলেন । কিছু দিন পরে, মিয়র সাহেব পুনরায় প্রস্তাব করিয়া পাঠাইলেন, পদার্থবিদ্যা বিষয়ে যে ছাত্রের রচিত একশত শ্লোক সৰ্ব্বোৎকৃষ্ট হইবেক, তিনি তাহাকে একশত টাকা পুরস্কার দিবেন। এবার, অনেকেই, এবিষয়ে বদ্ধপরিকর হইলেন । ৫৭ দিন পরে, আমার এক সহাধ্যায়ী, আমায় নির্জনে লইয়া গিয়া, জিজ্ঞাসা করিলেন, তুমি প্রস্তাবিত শ্লোকরচনায় প্রবৃত্ত হইবে কি না । আমি বলিলাম, আমার ইচ্ছা নাই ; কিন্তু অধ্যাপক মহাশয়ের অতিশয় পীড়াপীড়ি করিতেছেন ; যদি তাহাদের পীড়াপীড়ি এড়াইতে না পারি, শ্লোকরচনায় অগত্যা প্রবৃত্ত হইতে হইবেক । তখন তিনি বলিলেন, দেখ, এবার অনেকেই শ্লোকরচনায় প্রবৃত্ত হইবেক । কিন্তু, যদি আমরা দুই জনে মিলিয়া শ্লোকরচনা করি, তাহা হইলে, নিঃসন্দেহ আমরা পুরস্কার পাইব । অতএব, বিষয় বিভাগ করিয়া লইয়া, আমরা প্রত্যেকে পঞ্চাশ শ্লোক লিখিব ; হয় তোমার নামে, নয় আমার নামে, শ্লোকগুলি কর্তৃপক্ষের হস্তে দিব ; পুরস্কার পাইলে, উভয়ে সমাংশ করিয়া লইব । আমি প্রথমতঃ এ প্রস্তাবে কোনওমতে সম্মত হইলাম না। অবশেষে, তাহার অত্যন্ত পীড়াপীড়িতে, নিতান্ত অনিচ্ছাপূর্বক আমায় সম্মত হইতে হইল । যে দিন, শ্লোকগুলি কর্তৃপক্ষের হস্তে দিতে হইবেক, তাহার ১০১২ দিন পূৰ্ব্বে, আমার ঐ সহাধ্যায়ী বলিলেন, দেখ, নানা কারণে, আমার শ্লোকরচনা করা হইল না ; お○