পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ).djvu/৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१० বিদ্যাসাগর-গ্রন্থাবলী—শিক্ষা ভারতবর্ষে আসিবার মুখ্য অভিপ্রায় এই যে, তিনি এতদেশের আচার, ব্যবহার, পুরাবৃত্ত, ও ধৰ্ম্ম বিষয়ে বিশেষরূপ অনুসন্ধান করিতে পারিবেন। তিনি, এ দেশে আসিয়াই, ংস্কৃত ভাষার অনুশীলন করিতে আরম্ভ করিলেন । কিন্তু পড়াইবার নিমিত্ত পণ্ডিত পাওয়া দুর্ঘট হইয়া উঠিল । তৎকালীন ব্রাহ্মণপণ্ডিতেরা স্লেচ্ছজাতিকে পবিত্র সংস্কৃত ভাষা অথবা শাস্ত্রীয় বিষয়ে উপদেশ দিতে সম্মত হইতেন না। অনেক অনুসন্ধানের পর, এক জন উত্তম সংস্কৃতজ্ঞ বৈদ্য, মাসিক পাচ শত টাকা বেতনে, তাহাকে সংস্কৃত ভাষা শিখাইতে সম্মত হইলেন। সর উইলিয়ম জোন্স, স্বল্প দিনেই, উক্ত ভাষায় এমন ব্যুৎপন্ন হইয়া উঠিলেন যে, অনায়াসে, ইঙ্গরেজীতে শকুন্তলা নাটকের ও মনুসংহিতার অনুবাদ করিতে পারিলেন । তিনি, ১৭৮৪ সালে, ভারতবর্ষের পূর্বকালীন আচার, ব্যবহার, রীতি, নীতি, ভাষা, শাস্ত্র ইত্যাদি বিষয়ের অনুসন্ধানের অভিপ্রায়ে, কলিকাতায় এসিয়াটিক সোসাইটি নামক এক সভা স্থাপিত করিলেন । যে সকল লোক, এ বিষয়ে, তাহার হ্যায়, একান্ত অনুরক্ত ছিলেন, তাহার এই সোসাইটির মেম্বর হইলেন । হেষ্টিংস সাহেব এই সভার প্রথম অধিপতি হয়েন, এবং, প্রগাঢ় অনুরাগ সহকারে, সভার সভ্যগণের উৎসাহবৰ্দ্ধন করেন । সর উইলিয়ম জোন্সের তুল্য সৰ্ব্বগুণাকর ইঙ্গরেজ এ পর্য্যন্ত ভারতবর্ষে আইসেন নাই । তিনি, এতদ্দেশে, দশ বৎসর বাস করিয়া, উনপঞ্চাশ বর্ষ বয়ঃক্রমে, পরলোকযাত্র। করেন । ১৭৮৩ সালে, কোম্পানির কার্য্যনিৰ্ব্বাহপ্রণালী পালিমেণ্টের গোচর হইলে, প্রধান অমাত্য ফক্স সাহেব, ভারতবর্ষীয় রাজশাসন বিষয়ে, এক নূতন প্রণালী প্রস্তুত করিলেন। ঐ প্রণালী স্বীকৃত হইলে, ভারতবর্ষে কোম্পানির কোনও সংস্রব থাকিত না । কিন্তু ইংলণ্ডেশ্বর তাহাতে সম্মত হইলেন না। প্রধান অমাত্য ফক্স সাহেব পদচ্যুত হইলেন। উইলিয়ম পিট সাহেব, তাহার পরিবর্তে, প্রধান মন্ত্রীর পদে প্রতিষ্ঠিত হইলেন । তৎকালে তাহার বয়ঃক্রম চব্বিশ বৎসর মাত্র । কিন্তু তিনি, রাজকাৰ্য্যনিৰ্ব্বাহ বিষয়ে, অসাধারণ ক্ষমতাপন্ন ছিলেন। তিনি এতদেশীয় রাজশাসনের এক নূতন প্রণালী প্রস্তুত করিলেন। ঐ প্রণালী, পার্লিমেণ্টে ও রাজসমীপে, উভয়ত্রই স্বীকৃত হইল । এ পর্য্যন্ত, ডিরেক্টরেরাই এতদেশীয় সমস্ত কাৰ্য্যের নির্বাহ করিতেন ; রাজমন্ত্রীরা কোনও বিষয়ে হস্তক্ষেপ করিতেন না । কিন্তু, ১৭৮৪ সালে, পিট সাহেবের প্রণালী প্রচলিত হইলে, ভারতবর্ষীয় সমস্ত বিষয়ের পর্য্যবেক্ষণ নিমিত্ত, বোর্ড অব কণ্টোল নামে