পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ).djvu/৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૧૭ বিদ্যাসাগর-গ্রন্থাবলী—শিক্ষা তাহাদিগকে দূরীভূত করিলেন ; আর, তাহারা যে সকল সৈন্তের সংগ্ৰহ করিয়াছিলেন, সে সমুদয়ের শ্রেণীভঙ্গ করিয়া দিলেন ; তাহাদের পরিবর্তে, সেই স্থানে ইঙ্গরেজী সেন স্থাপিত করিলেন ; এবং, এক বারেই, টিপুর সহিত যুদ্ধের ঘোষণা করিয়া দিলেন। সমুদয় শক্ৰ মধ্যে, তিনিই অত্যন্ত উদ্ধত হইয়া উঠিয়াছিলেন। মান্দ্রাজের কৌন্সিলের সাহেবেরা, লার্ড ওয়েলেসলির মতের পোষকতা না করিয়া, বরং তাহার প্রতিকূলবর্তী হইয়াছিলেন। তিনি, অবিলম্বে, মান্দ্রাজে উপস্থিত হইলেন, তাহাদের তাদৃশ ব্যবহারের নিমিত্ত যথোচিত তিরস্কার করিয়া, স্বয়ং সমস্ত বিষয়ের নিৰ্ব্বাহ করিতে লাগিলেন ; এবং, সত্বর সৈন্তসংগ্ৰহ করিয়া, ১৭৯৯ খৃঃ অব্দের ২৭এ মার্চ, টিপু সুলতানকে আক্রমণ করিবার নিমিত্ত, সৈন্তপ্রেরণ করিলেন। টিপুর রাজধানী স্ত্রীরঙ্গপত্তন, মে মাসের চতুর্থ দিবসে, ইঙ্গরেজদিগের হস্তগত হইল। এই যুদ্ধে টিপু প্রাণত্যাগ করিলেন। হায়দরপরিবারের রাজ্যাধিকার শেষ হইল। ডিরেক্টরের, এই সংগ্রামের সবিশেষ বৃত্তান্ত শুনিয়া, গবর্ণর জেনেরল বাহাদুরকে বার্ষিক পঞ্চাশ সহস্র টাকার পেনশন প্রদান করিলেন। লার্ড ওয়েলেসলি, সিবিল সরবেণ্টদিগকে দেশীয় ভাষায় নিতান্ত অজ্ঞ দেখিয়া, ১৮০০ খৃঃ অব্দে, কলিকাতায় কালেজ অব ফোর্ট উইলিয়ম নামক বিদ্যালয় স্থাপিত করিলেন। সিবিলের ইংলণ্ড হইতে কলিকাতায় পহুছিলে, তাহাদিগকে প্রথমতঃ এই বিদ্যালয়ে প্রবিষ্ট হইতে হইত। তাহারা যাবৎ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হইতেন, তাবৎ কৰ্ম্মে নিযুক্ত হইতে পারিতেন না। এই বিদ্যালয়ের ব্যবহারার্থে, বাঙ্গালা প্রভৃতি ভাষাতে, কতিপয় পুস্তক সংগৃহীত ও মুদ্রিত হইল। এই বিদ্যালয়ের সংস্থাপনসংবাদ ডিরেক্টরদিগের নিকটে পন্থছিলে, র্তাহারা সাতিশয় সন্তুষ্ট হইলেন ; কিন্তু, বহুব্যয়সাধ্য হইয়াছে বলিয়া, সকল বিষয়ের সংক্ষেপ করিতে আজ্ঞাপ্রদান করিলেন । ১৮০৩ খৃঃ অব্দে, লার্ড ওয়েলেসলি বাহাদুরকে সিন্ধিয়া ও হোলকারের সহিত যুদ্ধে প্রবৃত্ত হইতে হইল। এই দুই পরাক্রান্ত রাজা, অল্প দিনেই, পরাজিত ও খৰ্ব্বীকৃত হইলেন । র্তাহীদের রাজ্যের অনেক অংশ ইঙ্গরেজদিগের সাম্রাজ্যে যোজিত হইল । সেপ্টেম্বর মাসে, ইঙ্গরেজের মুসলমানদিগের প্রাচীন রাজধানী দিল্লীনগর প্রথম অধিকার করিলেন। পূৰ্ব্বে, মহারাষ্ট্ৰীয়েরা দিল্লীশ্বরের উপর অনেক অত্যাচার করিয়াছিলেন। এক্ষণে, ইঙ্গরেজের তাহাকে সম্রাটের পদে পুনঃ স্থাপিত করিলেন। কিন্তু তাহার প্রভুশক্তি রহিল না। তিনি কেবল বার্ষিক পনর লক্ষ টাকা বৃত্তি পাইতে লাগিলেন।