পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/১০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চাকরি।
৯৯

খড়ার গ্রামে গমন করিলেন। ইত্যবসরে অগ্রজ মহাশয় বাটীর সম্মুখে ভ্রাতা ও বন্ধুবর্গ লইয়া কপাটী খেলা আরম্ভ করিলেন। দারোগাবাবু, ফাঁড়ীদারকে বলিলেন, “এ বামুনের (ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের) এত কি জোর যে, আমি দারোগা, আমার মুখের উপর জবাব দেয় যে, এক পয়সাও দিব না; এবং ইহাও অতি আশ্চর্য্য়ের বিষয় যে, (অঙ্গুলি দ্বারা দাদাকে দেখাইয়া) ঐ ছোঁড়াটা কি রকমের লোক; কল্য ডাকাইতি হইয়াছে, আজ সকালেই বাটীর সম্মুখে কপাটী খেলিতেছে।” ফাঁড়ীদার বলিল, “হুজুর, ইনি সামান্য লোক নহেন। ইনি দেশে আসিলে, জাহানাবাদের ডেপুটী ম্যাজিষ্ট্রেট্‌ বাবু ঈশ্বরচন্দ্র ঘোষাল, বন্ধুভাবে এখানে আসিয়া ইঁহার সহিত সাক্ষাৎকার লাভ করিয়া, আপনাকে কৃতার্থ জ্ঞান করেন, এবং শুনা যায় যে, বড় লাট ও ছোট লাট সাহেবের সহিত ইঁহার বন্ধুত্ব আছে, ইঁহার মত লইয়া জজ মাজিষ্ট্রেট্‌ বাহাল হয়।” ইহা শুনিয়া দারোগা স্তব্ধ হইল, এবং শান্তভাবে কার্য্য করিল; ডাকাইতির কোন কিনারা হইল না। গ্রীষ্মকালের শেষে কলিকাতায় আসিবার পর, এক দিবস ছোট লাট হেলিডের সহিত দাদার সাক্ষাৎ হইলে, কথাপ্রসঙ্গে হেলিডে সাহেব বলিলেন, “তুমি অতি কাপুরুষ, বাটীতে ডাকাইত পড়িল, আর তুমি বিষয় রক্ষা না করিয়া ও তাহাদিগকে না ধরিয়া, কাপুরুষের মত পলায়ন করিলে; ইহা অপেক্ষা তোমার পক্ষে আর কি লজ্জার বিষয় হইতে পারে।”

 ঐ সময়ে দেশহিতৈষী হেলিডে সাহেব, লেপ্টেনেণ্ট গবর্ণরের পদে অভিষিক্ত হইয়াছিলেন। ঐ পদ ভারতবর্ষে এই নুতন স্থাপিত হইল। ঐ সময়ে এডুকেশন কৌন্‌সেল কার্য্য়দক্ষ সেক্রেটারি ডাক্তার ময়েট্‌ সাহেব, কিছু দিনের জন্য অবকাশ গ্রহণ করিয়া, স্বদেশাভিমুখে যাত্রা করেন। হেলিডে সাহেব বাহাদুর নুতন লেপ্টেনেণ্ট গবর্ণর হইয়া, সাবেক শিক্ষাসমাজের পরিবর্তন করেন। এডুকেশন কৌন্‌সেল নামের পরিবর্তে এক্ষণে পব্‌লিক্‌ ইন্ষ্টি‌টিউসন্ এই নামকরণ করিলেন। সেক্রেটারি নাম না রাখিয়া, ডিরেক্টরের পদ স্থাপন করেন ও