পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/১০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৪
বিদ্যাসাগর-জীবনচরিত।

মহাশয় কালীকান্ত চট্টোপাধ্যায়কে নিম্নশ্রেণীর ছোট ছোট ছেলেদিগের বর্ণপরিচয় শিক্ষা দিবার নিমিত্ত নিযুক্ত করেন।

 খৃঃ ১৮৫৫ সালে সংস্কৃত-কলেজের অধ্যক্ষতাস্বত্বেও মহানুভব লেপ্টেনেণ্ট গবর্ণর হেলিডে সাহেব বাহাদুর, ইঁহাকে হুগলি, বর্দ্ধমান, নদীয়া ও মেদিনীপুর, এই জেলাচতুষ্টয়ের স্থানে স্থানে বিদ্যালয় সংস্থাপন ও পরিদর্শন জন্য মাসিক ২০০৲, দুই শত টাকা বেতনে স্পেসিয়্যাল ইস্পেক্টার নিযুক্ত করেন।

 ঐ সময়ে, অগ্রজের সংস্কৃত-কলেজের প্রিন্সিপালের বেতন ৩০০৲ তিন শত টাকা, উপরি উক্ত কার্যের বেতন ২০০৲, দুই শত টাকা, এতদ্ব্যতীত জেলায় জেলায় পরিভ্রমণের ব্যয় স্বতন্ত্র নির্দিষ্ট ছিল।

 তৎকালে প্রাট্‌ সাহেব এবং আরও দুই জন ইংরাজ, স্কুল ইনস্পেক্টারের পদে নিযুক্ত হন। এই সময়ে ইংলণ্ডের রাজপুরুষদের সহিত শিক্ষা-বিষয়ে পরস্পর পত্র লেখা চলিতেছিল। ত্বরায় স্কুল বসাইবার জন্য ইংলণ্ড হইতে আদেশপত্র আসায়, অগ্রজ মহাশয়, সত্বর স্থানে স্থানে স্কুল বসাইতে লাগিলেন। কিন্তু ডিরেক্টর ইয়ং সাহেব, আদেশ-পত্রের বিপরীত অর্থ করিয়া ক্ষান্ত থাকিলেন।অপর তিন জন স্কুল ইন্‌স্পেক্টার সাহেব এবং লেপ্টেনেণ্ট গবর্ণর হেলিডে সাহেবও বিপরীত বুঝিয়া, অগ্রজকে কিছুদিনের জন্য স্কুল বসাইতে ক্ষান্ত থাকিতে বলিলেন। তিনি ক্ষান্ত না হওয়ায়, ডাইরেক্টার এ বিষয়ে লেপ্টেনেণ্ট গবর্নরকে জানাইলেন। লেপ্টেনেণ্ট গবর্ণর, অগ্রজ মহাশয়কে ডাকাইয়া, অনেক বাদানুবাদের পর ঐ বিষয় বিলাতে রাজপুরুষদিগের গোচর করিলেন। রাজপুরুষগণ এই সংবাদ পাইয়া, লেপ্টেনেণ্ট গবর্ণর বাহাদুরকে ত্বরায় বিদ্যালয় স্থাপনের আদেশ পাঠান এবং ঐ পত্রে অগ্রজের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এই সূত্রে তাঁহার সহিত ডাইরেক্টার ইয়ং সাহেবের অপ্রণয় বদ্ধমূল হয়। এই অপ্রণয়ই তাহার ভাবী পদ-পরিত্যাগের মূল-কারণ।

 আদর্শ-বিদ্যালয়ে বা ইংরাজী বিদ্যালয়ে যাঁহারা শিক্ষকতার কার্য্যে প্রবৃত্ত হইবেন, তাঁহাদের শিক্ষার জন্য অগ্রজ, গবর্ণমেণ্টকে অনুরোধ করিয়া,