পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/১২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২২
বিদ্যাসাগর-জীবনচরিত।

বেঁচে থাক বিদ্যাসাগর চিরজীবী হ'য়ে,
সদরে ক'রেছো রিপোর্ট, বিধবাদের হবে বিয়ে।
কবে হবে এমন দিন,  প্রচার হবে এ আইন,
দেশে দেশে জেলায় জেলায় বেরোবে হুকুম,
বিধবা রমণীর বিয়ের লেগে যাবে ধূম,
সধবাদের সঙ্গে যাবো, বরণডালা মাথায় ল’য়ে।
আর কেন ভাবিস্ লো সই,  ঈশ্বর দিয়াছেন সই,
এবার বুঝি ঈশ্বরেচ্ছায় পতি প্রাপ্ত হই,
রাধাকান্ত মনোভ্রান্ত দিলেন না কো সই,
লোকমুখে শুনে আমরা আছি লোক-লাজভয়ে।
একাদশী উপসের জ্বালা,  কর্ণেতে লাগিত তালা,
ঘুচে যাবে সে সব জ্বালা, জুড়াবে জীবন,
দুজনাতে পালঙ্কেতে, করিব শয়ন—
বিনাইয়া বাঁধ্‌বো খোঁপা গুজিকাটি মাথায় দিয়ে।
যেদিন হ'তে মহাপ্রসাদ,  শুনেচি ভাই এ সংবাদ,
সে দিন হতে আনন্দেতে হয় না রেতে ঘুম—
পছন্দ করেছি বর, না হ'তে হুকুম,
ঠাকুরপোরে করব বিয়ে, ঠাকুরঝিরে ব'লে ক'য়ে॥

 উপরি উক্ত গীতটী কি নগরমধ্যে, কি পল্লীগ্রামে, কি বনমধ্যে, কি স্থলপথে, কি জলপথে, বঙ্গদেশের সর্ব্বত্রই সকলেরই শ্রুতিগোচর হইত। বিধবার বিবাহ হইবে, ইহা শ্রবণে, মনে মনে সকলেই পরম আহ্লাদিত হইয়াছিলেন। এপ্রদেশে ইতরজাতি অর্থাৎ দুলে, হাড়ী, কেওরা প্রভৃতি নীচজাতির বিধবার বিবাহ প্রচলিত আছে; কিন্তু ভদ্রসমাজে এ প্রথা না থাকায়, ইহা এক নূতন কাণ্ড।

 ঐ সময়ে শান্তিপুরের তন্তুবায়গণ উপরি উক্ত গীতটি কাপড়ের পাড়ে ঝাঁপে