পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/১২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিধবাবিবাহ।
১২৫

নারায়ণ লাহিড়ী, সরবেয়ার জেনের‍্যাল আফিসে মাসিক ৪০৲ টাকা বেতনে কেরাণীগিরি কর্ম্ম করিয়া দিনপাত করিতেন। অল্পবয়সে তাঁহার কয়েকটি পুত্র ও কন্যা উৎপন্ন হয়; তজ্জন্য ক্রমশঃ আয় অপেক্ষা সাংসারিক ব্যয়-বাহুল্য হইতে লাগিল। অতঃপর মাসিক ৪০৲ টাকায় সংসার নির্ব্বাহ হওয়া দুষ্কর হইবে মনে করিয়া, ভাবী-উন্নতির প্রত্যাশায়, কলিকাতা মেডিকেল কলেজে প্রবিষ্ট হইয়া, চিকিৎসা-বিদ্যা শিক্ষা করিতে প্রবৃত্ত হন। শেষ-বৎসরে তাঁহার সংসার এরূপ অচল হয় যে, অর্থাভাবে অধ্যয়ন পরিত্যাগ না করিলে, সংসারযাত্রা নির্ব্বাহ হওয়া দুরূহ। তৎকালে তাঁহার বিখ্যাত ও কার্য্য়দক্ষ পিতৃব্যগণের নিকট কোনরূপ সাহায্য না পাইয়া, পরিশেষে অগত্যা অগ্রজ মহাশয়কে বিনয়পূর্ব্বক আপন অবস্থা অবগত করাইলেন। তিনিও, লক্ষ্মীনারায়ণ বাবুর ঐরূপ কথা শুনিয়া, অনুগ্রহপূর্ব্বক প্রায় দুই বৎসর কাল মাসে মাসে ৫০৲ টাকা করিয়া, উহাঁর সংসারের ব্যয়-নির্ব্বাহার্থে প্রদান করিয়াছিলেন। সময়ে সময়ে এইরূপ কৃষ্ণনগরের অনেক লোকের উপকার করিয়াছিলেন। কথা লিখিলে, হয়ত অনেকের মনে দুঃখ হইবে, এজন্য ক্ষান্ত হইলাম। দুঃখের বিষয় এই, আমাদের দেশের অনেকে বিশেষ উপকার পাইয়াও কৃতজ্ঞতা দেখাইতে লজ্জাবোধ করেন এবং কেহ কেহ সময়ে সময়ে উপকারীর অনেক কুৎসাও করিয়া থাকেন।

 সন্‌ ১২৬২ সালের ১লা বৈশাখ, অগ্রজ, মহাশয়, শিশুগণের শিক্ষার সুবিধার জন্য বর্ণপরিচয়ের প্রথম ভাগ নূতন-প্রণালীতে প্রচারিত করিলেন। বালকদিগের প্রথমপাঠ্য এরূপ পুস্তক ইতিপুর্ব্বে কেহ প্রকাশ করেন নাই।

 সন্‌, ১২৬২ সালের ১লা আষাঢ় অগ্রজ মহাশয়, বালকবালিকালদিগের সংযুক্ত বর্ণপরিচয় শিক্ষার সৌকর্য্যার্থে, দ্বিতীয় ভাগ বর্ণ-পরিচয় নাম দিয়া, নূতন প্রণালীতে এক পুস্তক, মুদ্রিত, করিলেন। উহা যে প্রণালীতে রচনা করিয়াছিলেন, সেরূপ প্রণালীতে পূর্ব্বে কেহ কখন রচনা করেন নাই। এই দ্বিতীয় ভাগ বর্ণ-পরিচয় ভালরূপ.শিখিলে, বালকবালিকাগণ অপরাপর সকল