পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/১৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩২
বিদ্যাসাগর-জীবনচরিত।

আসিষ্টাণ্ট প্রভৃতি পদ পাইয়া থাকেন। এই সময়ে লর্ড ডালহৌসী গবর্ণর জেনেরাল বাহাদুর, সিবিলিয়ানগণের উচ্চপদযোগ্যতার পরীক্ষার জন্য, সেণ্টাল-কমিটি নামে একটী কমিটি স্থাপন করেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় উক্ত কমিটির অন্যতম মেম্বর হইলেন, এবং উক্ত কমিটিতে বাঙ্গালা ও হিন্দী পরীক্ষার, ইহার মতই প্রবল ছিল। কিছুকাল পরে নানা কারণে তিনি ঐ পদ পরিত্যাগ করেন।

 সন ১২৬৪ সালের অগ্রহায়ণ মাসে অগ্রজ মহাশয়, সিসিল বীডন মহোদয়কে বলিয়াছিলেন যে, সিপাহি-বিদ্রোহ-নিবন্ধন বিধবাবিবাহ কার্য্য স্থগিত রাখা হইয়াছে। ইহা শ্রবণ করিয়া সিসিল বীডন মহোদয় বলিলেন, “যখন আমাদের তরবারির উপর নির্ভর, তখন ভয় করিয়া বিধবাবিবাহ-কার্য্য স্থগিত রাখা তোমার কর্ত্তব্য নয়।” অনন্তর তাহার কথা শুনিয়া পুনর্ব্বার বিধবাবিবাহ দিতে যত্নবান্ হইলেন।

 ৫নং। সন ১২৬৪ সালের অগ্রহায়ণ মাসের শেষে ব্রাহ্মণজাতীয় একটি বিধবা-বালিকার বিবাহ হয়। কন্যার নাম শ্রীমতী লক্ষ্মীমণি দেবী, পিতার নাম স্বরূপচন্দ্র চক্রবর্ত্তী, নিবাস চন্দ্রকোণার অতি সন্নিহিত কেয়াগেড়ে গ্রাম। তৎকালে ঐ গ্রাম, জেলা হুগলির অন্তর্গত ছিল; এক্ষণে জেলা মেদিনীপুরভুক্ত হইয়াছে। কন্যার তিন বৎসর বয়সে প্রথম বিবাহ হয়, ঐ বৎসরেই বৈধব্য সংঘটন হয়; এক্ষণে অর্থাৎ দ্বিতীয়বার বিবাহের সময় বয়স আট বৎসর হইয়াছিল। প্রথম বরের নাম শিশুরাম বন্দ্যোপাধ্যায়, নিবাস শিরসা, জেলা মেদিনীপুর। দ্বিতীয় বরের নাম যদুনাথ চট্টোপাধ্যায়। ইনি সংস্কৃত-কলেজে অধ্যয়ন করিয়া, সংস্কৃত ও ইংরাজী ভাষায় ব্যুৎপন্ন হইয়াছিলেন; ইহাঁর নিবাস গৈপুর, জেলা নদীয়া। এই বিবাহেও অগ্রজ মহাশয় প্রচুর অর্থব্যয় করিতে কুষ্ঠিত হন নাই।

 ইতিপূর্ব্বে লেখা হইয়াছে যে, তৎকালীন লেপ্টেনেণ্ট গবর্ণর হেলিডে সাহেব মহোদয়, অগ্রজ মহাশয়কে আন্তরিক স্নেহ ও শ্রদ্ধা করিতেন। তিনি