স্থানে ফিমেল-স্কুল প্রতিষ্ঠিত হইবে, বিদ্যাসাগরই তাহার পথপ্রদর্শক। এতদ্ব্যতীত তৎকালে যে যে বালিকাবিদ্যালয়ে পারিতোষিক-দান-কার্য্য সমাধা হইত, সেই সেই স্থানীয় কৃতবিদ্যগণ, বিদ্যাসাগরের গুণ-কীর্ত্তন না করিয়া ক্ষান্ত হইতেন না।
মগরার সন্নিহিত দিগসুগ্রামনিবাসী সারদাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়, শৈশবকাল হইতে সংস্কৃত-কলেজে অধ্যয়ন করিয়া, সংস্কৃত ও ইংরাজী ভাষা উত্তমরূপ শিক্ষা করিয়া এস্কলার্শিপ প্রাপ্ত হন। কিন্তু তিনি পরীক্ষোত্তীর্ণ হইবার কিছু দিন পরেই বধির হইলেন; সুতরাং কর্ম্ম পাইলেন না। বহু পরিবার অনাহারে মারা পড়িবে, এই বলিয়া এক দিবস অগ্রজের নিকট রোদন করিতে লাগিলেন। ইঁহার রোদনে পরদুঃখকাতর অগ্রজ মহাশয়ের হৃদয়ে দয়ার উদ্রেক হইল; কিন্তু কি করিবেন, ভাবিয়া কিছুই স্থির করিতে না পারিয়া, অবশেষে সোমপ্রকাশনামে সংবাদপত্র প্রচার করেন। ইহাতে যাহা লাভ হইবে, তাহা সারদাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়ের পরিবারগণের ভরণপোষণার্থ ব্যয়িত হইবে। সোমপ্রকাশে প্রথম যাহা প্রকাশ হইয়াছিল, তাহা বিদ্যাসাগর মহাশয়ের নিজের রচনা। ঐ সময়ে বর্দ্ধমানাধিপতি ধীরাজ বাহাদুর, সংস্কৃত মহাভারত দেশীয়-ভাষায় অনুবাদ করিয়া প্রচার করিবার মানস করিলে, অগ্রজ তাঁহাকে বলিলেন, “সংস্কৃত-কলেজের ছাত্র সারদাপ্রসাদ উত্তম বাঙ্গালা অনুবাদ করিতে পারে। সারদা কালা হইয়াছে, অন্য কোন কর্ম্ম করিতে অক্ষম, কিন্তু আপনার মহাভারত রচনা ভালরূপ করিতে পারিবে এবং আপনার পুস্তকালয়ের লাইব্রেরিয়ানের কার্য্যও সুন্দররূপে সম্পন্ন করিতে পারিবে।” তাঁহার অনুরোধে সারদাপ্রসাদ রাজবাটীতে কর্ম্ম পাইয়া, পরিবার-প্রতিপালনে সক্ষম হইয়াছিলেন। অনন্তর দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ মহাশয়কে যোগ্যপাত্র বিবেচনায়, তাঁহাকে সোমপ্রকাশ সংবাদপত্র প্রচারের ভার অর্পণ করিলেন। তদবধি বিদ্যাভূষণ মহাশয়ই উহার উপস্বত্বভোগী হইলেন।
ফোর্ট উইলিয়ম কলেজের অধ্যক্ষ জি, টি, লেজার মার্শেল সাহেব, শিক্ষা-