পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/১৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৬
বিদ্যাসাগর-জীবনচরিত।

কয়েকটী স্কুল স্থাপনসময়ে, প্রিন্সিপাল সূর্য্যবাবু নিরন্তর যথেষ্ট পরিশ্রম করিয়াছিলেন।

 ১৮৮৮ খৃঃ অব্দে ১লা ভাদ্র বৃহস্পতিবার পূজ্যপাদ জ্যেষ্ঠা বধূদেবী পরলোক গমন করায়, অগ্রজ মহাশয় নানাপ্রকার দুর্ভাবনায় অভিভূত হইলেন এবং ক্রমশঃ তাঁহার শারীরিক ও মানসিক অবস্থার অবনতি হইতে লাগিল। ঐ বৎসর ভাদ্র মাসের ২৫ শে রবিবার সূর্য্য়বাবুকে পদচ্যুত করেন, এবং অঙ্কশাস্ত্রাধ্যাপক বাবু বৈদ্যনাথ বসুকে প্রিন্সিপালের কার্য্য় চালাইবার ভারার্পণ করেন। ইতিপূর্ব্বে অগ্রজ, কায়িক অসুস্থতানিবন্ধন মধ্যে মধ্যে বায়ুপরিবর্ত্তনজন্য কর্ম্মাটাড় নামক স্থানে গমন করিতেন, কিন্তু জামাতা সূর্য্যকুমারকে পদচ্যুত করিয়া অবধি প্রায় কর্ম্মাটাড়ে গমন করেন নাই। কলিকাতায় সর্ব্বদা অবস্থিতি করিয়া, ক্রমশঃ অবসন্ন হইতে লাগিলেন; তথাপি প্রায় প্রত্যহ বিদ্যালয়গুলি পরিদর্শন না করিয়া ক্ষান্ত থাকিতেন না।

 যৎকালে বিদ্যাসাগর মহাশয় কিছু দিনের জন্য তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার কার্য্য়কলাপ পরিদর্শন করিতেন, ঐ সময়ে তিনি তত্ত্ববোধিনী পত্রিকায় কয়েকটী প্রবন্ধ লিখিয়াছিলেন; তন্মধ্যে মহাভারতের উপক্রমণিকা অধ্যায় বাঙ্গালায় অনুবাদ করিয়া, ক্রমশঃ প্রকাশ করিয়াছিলেন। ১৮৬০ খৃঃ অব্দে পুনরায় উহা পুস্তকাকারে মুদ্রিত ও প্রচারিত করেন।

 ১৮৬০ খৃঃ অব্দে হিন্দু-পেট্রিয়টের বিখ্যাত এডিটার, ভবানীপুরনিবাসী বাবু হরিশ্চন্দ্র মুখোপাধ্যায় মহাশয় মানবলীলা সম্বরণ করেন। ইহাঁর উত্তরাধিকারীর মধ্যে অপর কেহ উক্ত সংবাদপত্র চালাইবার যোগ্য লোক না থাকা প্রযুক্ত, উহার উত্তরাধিকারিণী ৫০০০৲ পঞ্চ সহস্র মুদ্রা মূল্য লইয়া, কলিকাতা যোড়াসাঁকোনিবাসী বিদ্যোৎসাহী বাবু কালীপ্রসন্ন সিংহ মহোদয়কে হিন্দুপেট্রিয়টের সত্ত্বাধিকার বিক্রয় করেন। বাবু কালীপ্রসন্ন সিংহ, মাসিক ৬০০৲ শত টাকা বেতনে একজন সুযোগ্য ইউরোপীয়ান লেখক নিযুক্ত করিয়া, কিছু দিন হিন্দুপেট্রিয়ট সংবাদপত্র প্রকাশ করেন। পরে উহা প্রচার করিতে