পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/১৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬২
বিদ্যাসাগর-জীবনচরিত।

বিদেশের রাজা, সন্ত্রান্ত লোক ও ভূম্যধিকারী প্রভৃতি সকলেই আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করবেন। আপনি মনোযোগী হইলে, আক্লেশে বহুবিবাহ কুপ্রথা একেবারে দেশ হইতে তিরোহিত হইবে।” এই কথা শুনিয়া, তিনি দীর্ঘনিশ্বাসপরিত্যাগপূর্বক চিন্তা করিতে লাগিলেন। এমন সময়ে নবীন চক্রবর্ত্তী প্রভৃতি, কতিপয় কুলীন-মহিলার কাহিনী বর্ণন করিয়া বলিলেন, “মহাশয়! আপনি কলিকাতায় থাকেন, পল্লীগ্রামের কুলীনদের কোনও সংবাদ রাখেন না। এ সকল বিষয় আপনার কর্ণগোচর হইলে, দেশের অনেক মঙ্গল হইবে, একারণ আপনাকে জানাইলাম। ইহাতে আমাদের যদি কোন অপরাধ হয়, তাহা অনুগ্রহপূর্বক ক্ষমা করিবেন?”

 কিছুদিন পরে অগ্রজ মহাশয়, তাঁহাদিগকে বলিলেন, “কোন্ গ্রামের কোন কুলীন কত বিবাহ করিয়াছেন, কয়েক মাসের মধ্যে তাহার একটা তালিকা প্রস্তুত করিয়া আমার নিকট পাঠাইবে।” অনন্তর, বহুবিবাহ নিবারণের আবেদনপত্রে বঙ্গদেশের সন্ত্রান্ত লোকদিগের দস্তখত থাকা আবশ্যক বিবেচনা করিয়া, তিনি বৰ্দ্ধমানাধিপতি শ্রীযুক্ত মহারাজাধিরাজ মহাতাপচন্দ্র রায় বাহাদুর, নবদ্বীপাধিপতি শ্রীযুক্ত মহারাজা সতীশ্চন্দ্র রায় বাহাদুর, শ্রীযুক্ত রাজা প্রতাপচন্দ্র সিংহ রায় বাহাদুর, শ্রীযুক্ত রাজা সত্যনারায়ণ ঘোষাল বাহাদুর প্রভৃতি এবং প্রায় পঁচিশজন কৃতবিদ্য লোক ও অন্যান্য লোকের স্বাক্ষর করাইয়া, আবেদন-পত্র দাখিল করেন। তৎকালীন লেপ্টেনেণ্ট গবর্ণর সর সিসিল বীডন সাহেব, বহুবিবাহ কুপ্রথা রহিতের ঐ দরখাস্ত সমাদরপূর্ব্বক গ্রহণ করেন। কুলীন অবলাগণের দুর্ভাগ্যপ্রযুক্ত সেই সময়ে রাজ্যে মিউটিনির আশঙ্কা হওয়ায় ও তৎকালে অগ্রজ মহাশয়েয় অসুস্থতা নিবন্ধন চলৎশক্তি-রহিত হওয়ায় এবং অন্যান্য কারণে, বহুবিবাহ কুপ্রথা ভারতবর্ষ হইতে তিরোহিত হইল না।

 সন ১২৬৮ সালের ১লা বৈশাখ অগ্রজ মহাশয়, সীতার বনবাস মুদ্রিত করেন। আমরা বাল্মীকির রামায়ণ পাঠ করিয়াছি এবং অগ্রজ মহাশয়ের