পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/১৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭২
বিদ্যাসাগর-জীবনচরিত।

বেদন পাইব। যাহা হউক, যেরূপে পার আপাততঃ তাঁহার এ অভিপ্রায় রহিত করিবে এবং তিনি আপাততঃ ক্ষান্ত হইলে, এই সংবাদ সত্বর কান্দীতে আমার নিকট পাঠাইবে। যাবৎ এ সংবাদ না পাইব, তাবৎ আমার দুর্ভাবনা দূর হইবে না। দুই চারি দিন কোন মতে এখান হইতে যাইতে পারিব না; নতুবা অদ্যই আমি প্রস্থান করিতাম। যাহা হউক, যেরূপে পার তাঁহাকে আপাততঃ কোনমতে ক্ষান্ত করিবে; নিতান্ত ক্ষান্ত না হন, এই রবিবারে বাটী হইতে আসিতে না দিয়া, আমাকে সংবাদ লিখিলে, আমি যেরূপে পারি বাটী যাইব। আমি কায়িক ভাল আছি, ইতি তারিখ ৩০ শে অগ্রহায়ণ।

শুভাকাঙ্ক্ষিণঃ
শ্রীঈশ্বরচন্দ্র শর্ম্মণঃ।”

 পিতৃদেব মহাশয়কে উক্ত পত্র দেখান ও শ্রবণ করান হইল, তথাপি তিনি কাশী যাইবার জন্য ব্যগ্র হইলেন; সুতরাং পুনর্ব্বার কান্দীতে পত্র লেখা হইল। পত্র-প্রাপ্তি-মাত্রেই আহার-নিদ্রা-পরিত্যাগপূর্ব্বক বৰ্দ্ধমান আগমন করিলেন, এবং তথা হইতে রাত্রিতেই পাল্কী করিয়া জাহানাবাদে আসিলেন। তথা হইতে বেহারারা আরও আট ক্রোশ আসিতে অসমর্থ হইলে, পদব্রজেই বীরসিংহার বাটীতে আগমন করিলেন। তিনি অনেক অনুনয় বিনয় এবং রোদন করাতেও পিতৃদেব বাটীতে অবস্থিতি করিতে ইচ্ছা করিলেন না। কয়েক দিবস পরে পিতৃদেব, তাঁহার সমভিব্যাহারে কলিকাতায় গমন করিলেন। তথায় কতিপয় দিবস থাকিলেন এবং শেষে অগ্রজের অনেক অনুনয় বিনয়ে দেশে আগমন করিবেন স্থির করিলেন। ইতিমধ্যে কনিষ্ঠ ভ্রাতা ঈশানের সহিত কথাপ্রসঙ্গে পিতৃদেব তাহাকে বলেন যে, “ঈশ্বর আমায় দেশে ফিরিয়া যাইবার জন্য পীড়াপীড়ি করিতেছে, তোমার মত কি?” ঈশান বসিল, “আমার মতে দেশে গিয়া সংসারী-ভাবে থাকা আর আপনার উচিত নয়, এই সময় আপনার কাশীধামে গিয়া বাস করাই উচিত।” কনিষ্ঠ সহোদর ঈশান, পিতৃদেবকে এরূপ অসদৃশ নানাবিধ উপদেশ দেওয়াতে, তিনি একে-