পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/১৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮২
বিদ্যাসাগর-জীবনচরিত।

নাই। তৎকালে ভাগ্যদেবী মহেশ ন্যায়রত্নের পক্ষে অনুকুল থাকায়, দাদা বলিলেন, “অলঙ্কার-শ্রেণীতে কাব্যপ্রকাশ পড়াইতে হইলে, ন্যায় ভাল জানা আবশ্যক। মহেশ ন্যায়রত্ন সমগ্র ন্যায়শাস্ত্র রীতিমত অধ্যয়ন করিয়া, বিশেষরূপ বুৎপত্তি লাভ করিয়াছেন। অতএব আমার মতে ন্যায়রত্ন ঐ কার্য্য পাইবার উপযুক্ত পাত্র।” কাউএল সাহেব, বিদ্যাসাগর মহাশয়ের কথায়, ন্যায়রত্ন মহাশয়ের নামে রিপোর্ট করিয়া, ঐ পদে ন্যায়রত্ন মহাশয়কে নিযুক্ত করেন। ন্যায়রত্ন মহাশয়ের উন্নতির মূল বিদ্যাসাগর মহাশয়। এই বৃত্তান্তটি কাশীতে জয়নারায়ণ তর্কপঞ্চানন মহাশয় ও প্রেমচাঁদ তর্কবাগীশ মহাশয়ের প্রমুখাৎ শুনিয়াছিলাম।

হোমিওপ্যাথি।

 বহুবাজার মলঙ্গানিবাসী দেশহিতৈষী সম্ভ্রান্তবংশোদ্ভব বাবু রাজেন্দ্র দত্ত মহাশয়ের সহিত, অগ্রজ মহাশয়ের অত্যন্ত প্রণয় ছিল। এক দিবস উভয়ে কথোপকথন করিয়া স্থির করিলেন যে, ডাক্তার বেরিণি সাহেব কলিকাতায় আসিয়া, হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা-ব্যবসায়ের চেষ্টা করিয়া, কৃতকার্য হইতে পারিতেছেন না। অতএব এ বিষয়ে উপেক্ষা না করিয়া, হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা কিরূপ, তাহা পরীক্ষা করিয়া দেখা উচিত। কিয়ৎক্ষণ পরে দাদা বলিলেন, “রাজেন্দ্র! তুমি এক্ষণে বিষয়কর্ম্ম হইতে অবসর পাইয়াছ, অতএব তোমারই এবিষয়ে পরীক্ষা করা উচিত|” এইরূপ কথাবার্ত্তার পর, রাজেন্দ্রবাবু, বেরিণি সাহেবের সহিত কথাবার্ত্তা কহিয়া, তাঁহার উপদেশানুসারে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা অল্পদিনের মধ্যেই শিক্ষা করিলেন। প্রথমতঃ রাজেন্দ্রবাবু মালঙ্গার নিজ বাটীতেই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা আরম্ভ করিলেন এবং কলিকাতা সহরে ও উপনগরসমূহে চিকিৎসার উদ্যোগ করিয়া, কৃতকার্য্য হইতে পারিলেন না। অনেকে বলিতে লাগিল, “যদি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা