পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/২০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বাধীনাবস্থা।
২০৩

মধ্যে কয়েক জন আসিষ্টাণ্ট সার্জ্জন প্রেরণ করেন। মেণ্টন সাহেব, এই কথা শুনিয়া, অবিলম্বে ছুটি লইয়া ঐ স্থান হইতে প্রস্থান করেন। ডাক্তার ইলিয়াট্ বিলক্ষণ সহৃদয় ও কার্য্যদক্ষ ছিলেন। তিনি আসিয়া সহরের প্রকৃত অবস্থা জ্ঞাত হইয়া, চারি পাঁচটী ডিস্পেনসারি খুলিলেন এবং যে সকল রোগী বাটী হইতে ডিস্পেনসারিতে ঔষধ লইতে আসিতে অক্ষম, তাহাদিগকে ডাক্তারবাবুরা বাটীতে গিয়া দেখিয়া আসিবেন, এরূপ বন্দোবস্ত করিয়া দিলেন। ডিস্পেনসারির সঙ্গে অন্নসত্রের ব্যবস্থা হইল এবং এই অন্নসত্রে দুগ্ধ, সাগু প্রভৃতিও দিবার ব্যবস্থা হইল। বৰ্দ্ধমান জেলার মধ্যে ম্যালেরিয়াজরের ক্রমশঃ প্রাদুর্ভাব হইতেছে শুনিয়া, গ্রে সাহেব, বৰ্দ্ধমান জেলার মফঃস্বলস্থ প্রত্যেক গ্রামে অনুসন্ধান লইতে আদেশ করেন। গ্রে সাহেব, ডাক্তার সাহেব ও জেলার মাজিষ্ট্রেট সাহেবের রিপোর্ট পাইয়া, দুই তিন ক্রোশ অন্তর গ্রামের লোকসংখ্যা বিবেচনা করিয়া, ঔষধালয় খুলিতে আজ্ঞা করেন। ডাক্তার ইলিয়ট্, জেলার মধ্যে ঔষধ বিতরণের উত্তমরূপ বন্দোবস্ত করিয়াছিলেন, এবং অনেক নেটিভ ডাক্তার আনাইয়াছিলেন। এই সময়ে বিলাত-ফেরত ডাক্তার, বাবু গোপালচন্দ্র রায়, বাবু ফকিরচন্দ্র ঘোষ, বাবু রসিকলাল দত্ত, বাবু কালীপদ গুপ্ত, বাবু বন্ধুবিহারী গুপ্ত, এবং আসিষ্টাণ্ট সার্জন বাবু দীনবন্ধু দত্ত ও বাবু প্রিয়নাথ বসু প্রভৃতি কয়েক জনকে মেডিকেল ইনস্পেক্টর নিযুক্ত করিয়া, ইহাঁদের উপর পরিদর্শনের ভার দিলেন। ইহাঁরা প্রতিসপ্তাহে স্ব স্ব পরিদর্শনের রিপোর্ট সিবিল সার্জ্জনকে প্রেরণ করিতেন এবং সিবিল সার্জন, স্বীয় মন্তব্যসহ উক্ত রিপোর্টগুলি একত্র করিয়া গবর্ণমেণ্টে পাঠাইতেন। এই সময়মধ্যে ইলিয়ট্, এই তিন জন সিবিল সার্জ্জনের পদের রীতিমত বন্দোবস্ত করেন নাই, এবং এই সুবৃহৎ ব্যাপার অতি সহজে বিনা বন্দোবস্তে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের দ্বারা সম্পাদিত হইয়াছিল। অদ্যাবধি বৰ্দ্ধমানবাসীদিগের মধ্যে কেহই জানে না যে, বিদ্যাসাগর মহাশয় তাহাদের এই মহোপকার করিয়া, তাহাদিগকে কৃতজ্ঞতাপাশে বদ্ধ করিয়া গিয়াছেন। গবর্ণমেণ্টকে এইরূপ কার্য্যে প্রবৃত্ত